পুনর্বহালের দাবিতে এফবিসিসিআইয়ের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের অবস্থান কর্মসূচি, ফটকে তালা
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) থেকে অবৈধভাবে ও জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিতে পুনর্বহালের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। আজ শনিবার সকাল থেকে তাঁরা এফবিসিসিআই ভবন ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
আজ বেলা ১১টায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর বেলা দুইটায় আন্দোলনকারীরা এফবিসিসিআইয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তাঁরা কার্যালয়ে কাউকে ঢুকতেও দিচ্ছেন না, সেখান থেকে কাউকে বেরোতেও দিচ্ছেন না।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রশাসকের সঙ্গে চাকরিতে পুনর্বহালের বিষয়ে কার্যকর আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান ও ঘেরাও কর্মসূচি চলবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৯-২১ মেয়াদকালে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করা শেখ ফজলে ফাহিম ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় দলীয় কারণে ৬২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেন। পরবর্তীকালে অনেককে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হলেও ২৫ জনকে করা হয়নি।
এমনকি প্রতিষ্ঠানের চাকরিবিধি ১৯৯০ অনুযায়ী প্রাপ্য সুবিধাদি থেকেও সেই ২৫ জনকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকার বিষয়েও ফজলে ফাহিম, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন ও জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালী নানাভাবে হুমকি দিয়েছেন বলে আন্দোলনকারী ব্যক্তিদের অভিযোগ। এর ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মতিঝিল থানায় জিডি করতে বাধ্য হন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম এই ২৫ জন বঞ্চিত কর্মকর্তা–কর্মচারীকে পূর্ণাঙ্গ পাওনা পরিশোধ ও চাকরিতে পুনর্বহালের আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এর মধ্যে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এ এফ আইনুল হুদা, গাড়িচালক মো. ফজলুল হক ও নিরাপত্তাপ্রহরী আবদুল বারেক মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন সময় সমস্যা নিরসনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন করেছেন। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেও স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সরকার এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক নিয়োগ দেয়। আন্দোলনকারীরা তাঁর কাছে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাননি। এ পরিস্থিতিতে আজ অবস্থান কর্মসূচি ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছেন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।