অপরাধ–সম্পর্কিত ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলার জব্দ করেছে সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ ৬০০ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার জব্দ করেছে। এই অর্থ অপরাধ ও পাচারের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল বলে দেশটি আজ বুধবার জানিয়েছে। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী হিসেবে সিঙ্গাপুরের পরিচিতি থাকলেও গত বছর দেশটিতে বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে।
অর্থ পাচারের তদন্তের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ গত বছর বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছিল। এসব অভিযান ৩০০ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার পাচারের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। বিশ্বে এখন পর্যন্ত এ ধরনের যতগুলো অভিযান পরিচালিত হয়েছে, সিঙ্গাপুরের ওই অভিযান ছিল সেগুলোর মধ্যে অন্যতম বিস্তৃত।
ওই অভিযানের সময় আবাসন, গাড়ি ও বিলাসী পণ্য জব্দ করা হয়। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিদেশিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।
বৈশ্বিক আর্থিক অপরাধবিরোধী সংগঠন ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আজ সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়ং বলেন, ‘একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক ও বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে আমরা এটা উপলব্ধি করছি যে আমরা অনেক বেশি অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের ঝুঁকির মুখে রয়েছি।’
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তবে এ ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা ও একটি বিশ্বস্ত আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে সিঙ্গাপুরের সুনাম ধরে রাখার জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, আমরা সেসব ব্যবস্থা নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
যে প্রতিবেদনে অর্থ জব্দসংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেটি অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থের প্রবাহ বন্ধ করার লক্ষ্যে সিঙ্গাপুরের চেষ্টার অংশ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সিঙ্গাপুরে ঘটা এ ধরনের ঘটনার একটি বড় অংশের সঙ্গে বিদেশি অপরাধ সিন্ডিকেট জড়িত, যারা খুব আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব অপরাধ করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ৬০০ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার জব্দ করা হয়েছে, তার মধ্যে ৪১ কোটি ৬০ লাখ ডলার অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০০ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
বাকি যে অর্থ রয়েছে, সেসব অর্থের বেশির ভাগের বিষয়ে হয় তদন্ত এখনো চলছে কিংবা আদালতে মামলা বিচারাধীন।
গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরের আর্থিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, সম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচারের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, ব্যাংকগুলো যেহেতু আর্থিক ব্যবস্থা ব্যবহার করে বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেন করে এবং অর্থ পাচারের ঝুঁকি বহন করেন এমন গ্রাহকদের সেবা দেয়, সে কারণে অপরাধীরা অনেকটা সহজেই এগুলোর অপব্যবহার করতে পারে।