সবজির দাম চড়া, ডিম মুরগির দামও বেড়েছে
গত এক সপ্তাহে কেবল গোল বেগুনই কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলেছেন, তাঁদের কিনতেই হচ্ছে বেশি দামে।
টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের আগাম সবজি নষ্ট হওয়ার ফলে রাজধানীর বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। বেশির ভাগ সবজি এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে বাড়তি ডিম ও মুরগির দামও। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি ডজন ডিম ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকা কেজি ছুঁয়েছে। আগে থেকেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছিল চাল, ডাল, আটা, ময়দা ও সয়াবিন তেলের মতো নিত্যপণ্য। এসব পণ্যের দাম আর কমেনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার পলাশী বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, কাঁঠালবাগান বাজার ও মগবাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। বেগুনের তিনটি ধরনের মধ্যে লম্বা ও সাদা বেগুন ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর বেগুনি রঙের গোল বেগুনের দাম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। গত এক সপ্তাহে কেবল গোল বেগুনই কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
ডিমের সঙ্গে সঙ্গে মুরগির দামও বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি কোনো কোনো বাজারে ২১০ টাকাও চাওয়া হচ্ছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। রুই, পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
বেগুনের দাম অতিরিক্ত বেড়েছে উল্লেখ করে নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মামুন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাদা ও লম্বা বেগুন পাইকারিতেই ১০০ টাকার মতো কিনতে হচ্ছে। আর গোল বেগুন কিনতে হচ্ছে আরও বেশি দামে।
অন্যান্য সবজির মধ্যে টমেটো ও গাজর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। করলা, ধুন্দুল, ঝিঙে, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, কচুর মুখী, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে হাতে গোনা দু-একটি সবজি। এর মধ্যে পটোল ও ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। তবে বাজারে সবচেয়ে সস্তার সবজি এখন পেঁপে, প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেনি, বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে বাজারে আসার আগ্রহ পাই না। কোনো জিনিসের দামই কমতে শুনি না
বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেকটা অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে আগাম সবজির খেত পানির নিচে চলে যাওয়ায় সবজির সরবরাহ কমেছে। তাই দাম বাড়তির দিকে।’
ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গত কয়েক দিন ধরে। কোথাও কোথাও ১৬৫ টাকাও চাওয়া হচ্ছে। সাদা রঙের ডিম কিনলে একটু কমে পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি ডজনে দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
ডিমের সঙ্গে সঙ্গে মুরগির দামও বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি কোনো কোনো বাজারে ২১০ টাকাও চাওয়া হচ্ছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। রুই, পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
অনেকটা অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে আগাম সবজির খেত পানির নিচে চলে যাওয়ায় সবজির সরবরাহ কমেছে। তাই দাম বাড়তির দিকে।
দেশি পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে মান একটু ভালো হলে বিক্রেতারা আরও বেশি দাম চাইছেন। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। সরকার আলু, দেশি পেঁয়াজ ও ডিমের দাম বেঁধে দিলেও কোনোটিই নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না। চাল, ডাল, আটা, ময়দা ও সয়াবিন তেলের মতো অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে।
পলাশী বাজারে সদাই করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফারুক হোসেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে বাজারে আসার আগ্রহ পাই না। কোনো জিনিসের দামই কমতে শুনি না।’