পরিচালন ও সুদ খরচ বৃদ্ধিতে কমেছে সিঙ্গার বাংলাদেশের মুনাফা
দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইলেকট্রনিকস খাতের বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশের আয় বেড়েছে চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন)। আয় বাড়লেও পরিচালন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ৩৫ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ। এ কারণে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএসও অর্ধেকের বেশি কমে গেছে।
সিঙ্গার বাংলাদেশ আজ রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তাদের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার এ তথ্য পাওয়া গেছে। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি ১ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির আয় ছিল ১ হাজার ৯২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সিঙ্গারের আয় বেড়েছে ৯৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৯ শতাংশ।
ব্যবসা ভালো করলেও একই হারে মুনাফা বাড়েনি কোম্পানিটির। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সিঙ্গার বাংলাদেশ কর–পরবর্তী মুনাফা করেছে প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ৫৮ কোটি টাকার বেশি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা ৩৫ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ কমে গেছে। কোম্পানিটির মুনাফা কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান কারণ দুটি। প্রথমত, পরিচালন খরচ বেড়ে যাওয়া; দ্বিতীয়ত, সুদ বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সিঙ্গারের পরিচালন খরচ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ কোটি টাকা বা প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন এ সময়কালে কোম্পানিটির পরিচালন খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ২২৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৯৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সুদ বাবদ ও ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সুদ ও ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে খরচ বেড়েছে ২৪ কোটি টাকা। এসব কারণে কোম্পানিটির আয় বাড়লেও মুনাফা কমেছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির সুদ বাবদ খরচ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ কোটি টাকা বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ঋণের সুদ বাবদ কোম্পানিটির খরচ হয়েছে ৪৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৭ কোটি টাকা। এর বাইরে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত ছয় মাসে সিঙ্গারের লোকসান হয়েছে পাঁচ কোটি টাকার বেশি। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এ বাবদ কোম্পানিটি লোকসান করেছে ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।