সাভারের রানা প্লাজা ধসে আহত পোশাকশ্রমিকদের সাড়ে ৯ শতাংশের কোনো আয় নেই। সাড়ে ১০ শতাংশের আয় ৫ হাজার ৩০০ টাকার নিচে। সাড়ে ৩৭ শতাংশ আহত শ্রমিকের আয় ৫ হাজার ৩০০ থেকে ১০ হাজার ৩০০ টাকা। সাড়ে ২৯ শতাংশ শ্রমিকের আয় ১০ হাজার ৩০১ থেকে ১৫ হাজার ৩০০ টাকা। এর বেশি আয় ১৩ শতাংশের।
করোনাকালে আহত শ্রমিকদের মধ্যে বেকারত্বও বেড়ে গেছে। ২০১৯ সালে ৫১ শতাংশ শ্রমিক বেকার ছিলেন। গত বছর সেটি বেড়ে ৫৭ শতাংশ হয়েছে, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কাজে থাকা ৪৩ শতাংশ শ্রমিকের ১২ শতাংশ পোশাক কারখানা, ১২ শতাংশ দরজি, ৩ শতাংশ কৃষিকাজ, আড়াই শতাংশ দিনমজুরি, ২ শতাংশ গৃহকাজ, সাড়ে ৩ শতাংশ বিক্রয়কর্মী এবং ৭ শতাংশ অন্যান্য কাজ করেন।
রানা প্লাজা ধসের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে একশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে ভবন ধসের ঘটনায় ১ হাজার ৪০০ আহত শ্রমিকের মধ্যে ২০০ জন অংশ নিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ‘কোভিড-১৯: চ্যালেঞ্জেস ফর দ্য রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি সারভাইভারস’ শীর্ষক আলোচনায় জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপে উঠে এসেছে, রানা প্লাজা ধসে আহত শ্রমিকদের মধ্যে ৯২ শতাংশই করোনাকালে সরকারের কোনো সহায়তা পাননি। মাত্র ৮ শতাংশ শ্রমিক অল্প কিছু সহায়তা পেয়েছেন। যদিও প্রাণে বেঁচে যাওয়া এসব শ্রমিক দুঃসহ জীবন যাপন করছেন। ১৪ শতাংশ শ্রমিকের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। তাঁরা মাথাব্যথা, হাত ও পায়ে ব্যথা এবং কোমরব্যথার সমস্যায় ভুগছেন। আবার সাড়ে ১২ শতাংশ শ্রমিক মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন। সংখ্যাটি ২০১৯ সালেও ছিল সাড়ে ১০ শতাংশ। এর মানে ২ শতাংশ শ্রমিকের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে।
রানা প্লাজা ধসে আহত শ্রমিকদের মধ্যে ৯২ শতাংশই করোনাকালে সরকারের কোনো সহায়তা পাননি। মাত্র ৮ শতাংশ শ্রমিক অল্প কিছু সহায়তা পেয়েছেন।
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, আট বছরেও বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের এ অবস্থা দুঃখজনক। অথচ শ্রমিকদের দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের অক্সিজেন বলা হয়। ঔপনিবেশিক মন–মানসিকতা থেকে বেরিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করতে হবে।
আরও বক্তব্য দেন সাংসদ শিরিন আক্তার, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের হামিদা হোসেন, আইএলওর এ–দেশীয় পরিচালক টুমো পোটিয়াইনেন, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।