কারখানার নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা
আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং কারখানার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনে ব্যবসার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন অন্তবর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ীরা।
আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি)। সেখানে ব্যবসায়ীরা বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারি দল বা বিরোধী দল বলে কিছু নেই। যারাই সরকার পরিচালনায় থাকবে, তাদের সহযোগিতা করবে বেসরকারি খাত।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দেশের ছাত্রসমাজ স্মরণীয় ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানায় দুষ্কৃতকারীরা ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এবং তা চলতে পারে না। এই দুষ্কৃতকারীদের রুখতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
তাই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই।’
আইসিসিবি সভাপতি জানান, দেশের সব ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁদের সংগঠন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, ‘যে অন্তর্বর্তীদের সরকার আসবে সেটি পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু আমরা যারা উৎপাদন ও রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত রয়েছি, তাদের ঘণ্টা-মিনিট হিসাব করে কাজ করতে হয়। গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন কারখানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুট হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা কারখানা চালাতে পারছি না।’
এ কে আজাদ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা চারটি বিষয় বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি। এগুলো হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা, কারখানা চালুর ব্যবস্থা করা, মানুষের জীবনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং থানা ও পুলিশকে সক্রিয় করা।
এই ব্যবসায়ী নেতা জানান, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং কারখানার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। গত রাতে তিনি সেনাবাহিনী প্রধানসহ তিনি বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি সেনাবাহিনীর এই সহযোগিতা চান।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ডক্টর ইউনূসকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি দেশে এবং আন্তর্জাতিক মহলে একজন সম্মানিত ব্যক্তি। ফলে দেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা পাওয়া সহজ হবে বলে আশা করছি। আর দেশের অর্থনীতি ঠিক থাকলে ওনারও কাজের সফলতা আসবে বলে মনে করি।’
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শুধু ব্যবসার জন্য নয়, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্যও আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। সিমিন রহমান বলেন, দেশ বর্তমানে একটি কঠিন ও পরিবর্তনশীল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় নানা ধরনের প্রপাগান্ডার বাইরে দেশের একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।