গ্যাসের দাম বাড়লে ইস্পাত খাত ধ্বংস হবে: বিএসএমএ
শিল্পে নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ)। তারা বলছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে স্থানীয় ইস্পাত খাত ধ্বংস হবে।
বিএসএমএর সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এই উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত সরকারের সময় দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে দেশের ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন অস্তিত্বসংকটের মুখে। এ অবস্থায় গ্যাসের দাম আড়াই গুণ বাড়ানো হলে শিল্পের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। নতুন উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব কার্যকর হলে ইস্পাতসহ স্থানীয় সব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিএসএমএর সভাপতি আরও বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির মতো পদক্ষেপে দেশের উদীয়মান ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এবং স্থানীয় বাজার আমদানিনির্ভর হয়ে পড়বে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বে। তখন অবকাঠামো উন্নয়ন অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হবে।
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেন, বিএসএমএর সদস্য প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন গ্যাসনির্ভর। গ্যাসের দাম বাড়লে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। এতে রডসহ এমএস পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে।
নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের কথা বলে দুই বছর আগে শিল্প খাতের জন্য গ্যাসের দাম ১৫০ থেকে ১৭৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। গত বছরও এর কিছুটা দাম বাড়ানো হয়। কিন্তু দুই বছর পরেও শিল্পে গ্যাসের সংকট কাটেনি। সরবরাহ বৃদ্ধির কথা বলে সরকার এখন আবার গ্যাসের দাম আড়াই গুণ বাড়াতে চাইছে।
জ্বালানি বিভাগের অনুমোদন নিয়ে দাম বাড়াতে গত সোমবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত পুরো গ্যাসের বিল হবে নতুন দামে। পুরোনোদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিল্পকারখানায় দুই ধরনের গ্যাস-সংযোগ আছে। একটির মাধ্যমে কারখানায় বয়লার চালানো হয়। অন্যটি বড় কারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ক্যাপটিভ সংযোগ। দুটি সংযোগের ক্ষেত্রেই ইউনিটপ্রতি গ্যাসের দাম এখন একই। পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পুরোনো গ্রাহকের ক্ষেত্রে অনুমোদিত লোডের বাড়তি ব্যবহৃত গ্যাসের বিল হবে নতুন দামে। যেসব শিল্পকারখানা নতুন সংযোগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আগের দাম দিতে হবে। এর বাইরে বাকিটুকুর জন্য নতুন দাম প্রস্তাব করা হয়েছে।