এফবিসিসিআই প্রশাসকের পদত্যাগ ও সহায়ক কমিটি বাতিলের দাবি

দেশের ব্যবসায়ী–শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসকের পদত্যাগ দাবি করেছেন একদল ব্যবসায়ী। একই সঙ্গে তাঁরা এফবিসিসিআইয়ের সহায়ক কমিটি ভেঙে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান এফবিসিসিআইয়ের সাবেক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ‘এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক ও সংগঠনটির সাবেক পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ দিনের মধ্যে এসব দাবি না মানা হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’ লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিকে এফবিসিসিআইর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তা দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে নির্বাচন দিতে হবে। সহায়ক কমিটি বাতিল করে প্রকৃত নিরপেক্ষ ও সৎ ব্যবসায়ী প্রতিনিধির সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, জুন মাসে নতুন অর্থবছরের (২০২৫–২৬) জাতীয় বাজেট প্রকাশ করা হবে। এফবিসিসিআইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকের এর আগেই সংগঠনের সাবেক নেতা ও প্রতিনিধিদের নিয়ে বাজেটবিষয়ক কমিটি গঠন করা উচিত ছিল। তবে এ ব্যাপারে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি ২০-২৫ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি নিয়ে প্রশাসকের কাছে নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছি। সংস্কার নিয়েও প্রশ্ন করেছি। তবে তিনি কোনো সমাধান দেননি।’ মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশ থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাঁদের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের কাছে আসেন। কিন্তু সেই পথ এখন বন্ধ। কারণ বর্তমান প্রশাসক আমাদের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করছেন না।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, বর্তমান প্রশাসক জানেন তিনি নির্বাচন দিলে ক্ষমতা হারাবেন। সে জন্য নির্বাচন বিলম্বিত করে নিজেদের কমিটির মেয়াদ তৃতীয় দফায় বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কীভাবে তিনি ব্যবসায়ীদের সমস্যার প্রতিনিধিত্ব করবেন।

এফবিসিসিআইয়ের সংস্কার কার্যক্রম খুবই ধীরগতিতে চলছে মন্তব্য করে নেতারা বলেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করে আগামী তিন মাসের মধ্যে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করা প্রয়োজন।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিনা) আয়োজিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে এফবিসিসিআই থেকে প্রতিনিধি হয়েছে হিসেবে যাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাঁদের অনেকেই এফবিসিসিআইয়ের সদস্য নন। তবে এফবিসিসিআইয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের সদস্যসচিব সংগঠনের সাবেক পরিচালক মো. জালালউদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পরিচালক নিজামউদ্দীন রাজেশ, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পরিচালক আবু মোতালেব, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভরসা, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক হাফেজ হারুন প্রমুখ।