চিনিকলে আগুন
এস আলমের চিনিকলে উৎপাদন শুরু হচ্ছে আজ
চিনিকল চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসাইন।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার উৎপাদন শুরু করছে চট্টগ্রামের এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। উৎপাদন শুরুর আগে কারখানার গুদাম থেকে আগুনে পুড়ে নষ্ট হওয়া চিনি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আজ সকালের মধ্যে কারখানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করতে চায় চিনিকল কর্তৃপক্ষের।
চিনিকল চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ বিভাগ) মোহাম্মদ হোসাইন। তিনি বলেন, আজ থেকে চিনি উৎপাদন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আছে; এ লক্ষ্যে কাজ চলছে। তবে আগে যে চিনির মজুত ছিল, তার সরবরাহ অব্যাহত ছিল।
গত সোমবার বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় কর্ণফুলী নদীর পাড়ে অবস্থিত এস আলম সুপার রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গুদামে আগুন লাগে। শেষমেশ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কারখানার আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়। অগ্নিকাণ্ডের পর কারখানায় চিনি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, কারখানায় পাঁচটি গুদাম আছে; এর মধ্যে ১ নম্বর গুদামে আগুন লাগে।
সেই গুদামে ১ লাখ ২০ হাজার টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। তবে আগুনে অন্য চারটি গুদামের তেমন ক্ষতি হয়নি।
এস আলম গ্রুপের উপব্যবস্থাপক আশীষ কুমার নাথ প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে একটি গুদাম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অন্য চারটি গুদাম ও কারখানা অক্ষত আছে। তাই উৎপাদনে সমস্যা হবে না। এখন বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ চলছে। আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা আছে।
আশীষ কুমার নাথ আরও বলেন, চিনিকলে প্রতিদিন ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টন চিনি উৎপাদিত হয়। আগুনের কারণে এখন পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতায় চিনি উৎপাদন করা সম্ভব হবে না; আপাতত দৈনিক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টন চিনি উৎপাদন করার পরিকল্পনা আছে। পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতায় চিনি উৎপাদন করতে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদ্ঘাটনে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়; কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমানকে। আগুন লাগার পর ইছানগর ও আশপাশের এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয় হয়েছে।
এদিকে চিনিকলের গলিত চিনিমিশ্রিত পানির কারণে কর্ণফুলী নদীতে মাছসহ নানা জলজ প্রাণী মারা গেছে। নদীতে মৃত মাছ ভেসে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, নদীর যেসব এলাকায় পোড়া চিনি পড়েছে, সেই এলাকাগুলোর জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকিতে পড়বে। কর্ণফুলীর অন্যতম বিপন্ন প্রাণী গাঙ্গেয় ডলফিনও এতে ঝুঁকিতে পড়েছে।