খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়েনি

সয়াবিন তেলছবি: ফ্রিপিক

সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পর খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছিলেন, মঙ্গলবার (আজ) থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। কিন্তু রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ ঠিক হয়নি। গতকাল সোমবার সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি আট টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও হাতিরপুল বাজারের বেশ কয়কেজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূল্যবৃদ্ধির পরও ডিলাররা খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ শুরু করেননি।

অন্যদিকে ডিলাররা জানিয়েছেন, মূল্যবৃদ্ধির পর তাঁদের কাছ থেকে কোম্পানিগুলো অর্ডার (ডিউ) নিয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে খুচরা পর্যায়ে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

বেশ কিছুদিন হলো বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো কিছুদিন ধরে আন্তর্জাতিক দরের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশেও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে ডিলার বা সরবরাহকারী পর্যায় থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমে যায়। ফলে খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহে সংকট তৈরি হয়। এমন অবস্থায় গতকাল ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

ঢাকায় সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর বাণিজ্য উপদেষ্টা সয়াবিন তেল ও পাম তেলের নতুন দাম ঘোষণা করেন, যা আজ থেকে কার্যকর হয়।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে, এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা এত দিন ছিল ১৬৭ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৫৭ টাকা। খোলা পাম তেলের লিটারও ১৪৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকা।

গতকাল দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বাণিজ্য উপদেষ্টা ও ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, আজ থেকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে সরবরাহ স্বাভাবিক দেখা যায়নি।

শেওড়াপাড়া বাজারের বিক্রেতা আবদুল হাকিম জানান, গতকাল দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর এখনো কোনো ডিলার তেল বিক্রি করতে আসেননি। তাঁরা তেল বিক্রির অর্ডারও নেননি।

মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের মুদিদোকানি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘একটি ভোজ্যতেল কোম্পানির (নাম প্রকাশ করেননি) ডিলার চার কার্টন তেল দিয়েছেন। তবে ওই বোতলগুলোর গায়ে আগের দর (এমআরপি) লেখা থাকলেও ডিলার আমার কাছ থেকে নতুন দামই নিয়েছেন। এর ফলে এসব বোতলের তেল এখন ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করতে কিছুটা সমস্যা হবে।’

এদিকে ডিলাররা জানিয়েছেন, কোম্পানিগুলো তাঁদের কাছে নতুন দামে তেল বিক্রির ক্রয়াদেশ নিচ্ছে। এই দরের তেল আগামীকাল বুধবার বিক্রি শুরু হবে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ফ্রেশ ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেলের ডিলার মো. ইয়াসিন বলেন, গতকাল কোম্পানির পক্ষ থেকে ৪০০ কার্টন তেলের ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সকালে এ তেল বাজারে আসবে। তখন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হবে।