তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, চামড়ায় ভর করে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১২.৮৪%
তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মৎস্য, প্লাস্টিক পণ্যসহ কয়েকটি খাতের ওপর ভর করে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই–ডিসেম্বর) রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২ হাজার ১৭৪ কোটি ডলারের পণ্য।
গত জুলাই–ডিসেম্বরে তৈরি পোশাক খাতে সোয়া ১৩ শতাংশের বেশি রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ডলারের। গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।
রপ্তানির বড় খাতগুলোর মধ্যে এ সময়ে দুই অঙ্কের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত, হিমায়িত মৎস্য, প্লাস্টিক, চামড়াবহির্ভূত জুতা, বিশেষায়িত বস্ত্র রপ্তানিতে। ইপিবির হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ১৬ কোটি ডলারের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ। গত জুলাই–ডিসেম্বরে প্রায় ৫৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ২৪ কোটি ডলারে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে চামড়াবহির্ভূত জুতা রপ্তানি বাড়ছে বাংলাদেশের। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে এই খাতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত জুলাই–ডিসেম্বরে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি ডলারের চামড়াবহির্ভূত জুতা রপ্তানি হয়েছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২০ কোটি ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ৩৯ শতাংশের বেশি।
চামড়াবহির্ভূত জুতা রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বজুড়েই এখন চামড়াবিহীন জুতার চাহিদা বাড়ছে। চামড়াবিহীন জুতার বৈশ্বিক এই বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। বাংলাদেশও বৈশ্বিক বাজারে ধীরে ধীরে এ ধরনের জুতা রপ্তানিতে তাদের হিস্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই খাতে ভালো প্রবৃদ্ধি রয়েছে।
চামড়াবিহীন জুতার মতো বিশেষায়িত বস্ত্রপণ্য রপ্তানি খাতও ভালো করেছে গত ছয় মাসে। গত জুলাই–সেপ্টেম্বরে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল সাড়ে ১৯ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৬ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এ খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ।