প্রচণ্ড দাবদাহে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক লাখ মুরগি মারা যাচ্ছে। এতে গত ১০ দিনে প্রান্তিক খামারিদের ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। এ কারণে ভবিষ্যতে পোলট্রিশিল্পে বড় রকমের সংকট দেখা দিতে পারে। বাড়তে পারে ডিম ও মুরগির দাম। তাই সংকট উত্তরণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খামারিরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদারের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গরমে প্রতিদিন মুরগি মরলেও এক দিনের বাচ্চা কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। দাম বেশি দিয়েও মুরগির বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদের পর থেকে শুরু হওয়া চলমান তাপপ্রবাহের ফলে সারা দেশে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ মুরগি মারা যাচ্ছে। যার আনুমানিক মূল্য ২০ কোটি টাকা। ডিম ও মুরগি উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে ১০ শতাংশ পর্যন্ত । এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে ব্রয়লার মুরগি ও ডিম সরবরাহে সংকট দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
খামারিরা জানান, ঈদের পর গত ১০ থেকে ১২ দিনে সারা দেশে ১০ লাখের বেশি ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালি মুরগি মারা গেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ছিল ব্রয়লার মুরগি। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছিল লেয়ার মুরগি। এ ছাড়া সোনালিসহ অন্যান্য মুরগি মারা গেছে ৫ শতাংশ। এতে সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকার মতো। এ অবস্থা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকলে খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ডিম ও মুরগির উৎপাদন কমে যাবে। তাতে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডিম ও মুরগির দাম মারাত্মকভাবে বাড়বে বলে ধারণার কথা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
খামারিদের দাবি, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারের পক্ষ থেকে খামারিদের মুরগির বাচ্চা ও পোলট্রি ফিডে ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখতে হবে। যাতে করে বাজারে সংকট তৈরি না হয়। প্রান্তিক খামারিদের করপোরেট কোম্পানির জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করতে মুরগির বাচ্চা ও পোলট্রি ফিড বিদেশ থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
খামারিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ গরমে সবচেয়ে বেশি মুরগি মারা যাচ্ছে নরসিংদীতে। এ অঞ্চলে গত ১২ দিনে প্রায় ৩ লাখ, ময়মনসিংহ ও গাজীপুর অঞ্চলে ২ লাখ, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১ লাখ ৭৫ হাজার, যশোরে ১ লাখ ৫০ হাজার, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ এবং সিলেট ও পাবনায় ৫০ হাজার মুরগি মারা গেছে।