‘সাপের খেলা’ যে জানে, সে ঠিকই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে: পরিকল্পনামন্ত্রী
খাদ্যপণ্যের দাম সাম্প্রতিক সময়ে বেশ বেড়ে যাওয়ার প্রতিফলন ঘটেছে আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতির হিসাবে। আগের দুই মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছিল, তবে সরকারের প্রত্যাশা ছাপিয়ে গত মাসে তা অনেকটা বেড়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মনে করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কাজটি ‘সাপের খেলা’ জানার সঙ্গে তুলনীয়।
এম এ মান্নান বলেন, ‘সাপের খেলা যে জানে, সে ঠিকই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। মূল্যস্ফীতি ওঠা–নামা করবে। বাজারের স্বাধীনতা আছে। যখন মূল্যস্ফীতি বাড়ে, তখন মানুষ একটু চাপে থাকে। তখন অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা কমিয়ে দেয়।’
মূল্যস্ফীতির নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে প্রথম আলোকে এ কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। আজ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি এখন ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে ডিম, মুরগিসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এসব পণ্য মানুষকে যন্ত্রণা দিয়েছে। তবে চালের দাম স্থিতিশীল।’
পরিকল্পনামন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘উদীয়মান অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি আশীর্বাদ। তবে মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণ করা চ্যালেঞ্জিং।’
গত দুই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমার পর গত আগস্টে তা আবার বেড়েছে। এ মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে লক্ষণীয় দিক হচ্ছে, আগস্টে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ অনেক বেড়েছে। গ্রাম ও শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশের বেশি।
সরকারের প্রত্যাশা ছিল আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমবে। ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভার (একনেক) পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মূল্যস্ফীতি জোর করে কমানো যায় না। কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে। আমি ঝুঁকি নিয়ে বলতে পারি, চলতি আগস্টে মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৪ পয়েন্ট কমবে।’
আগস্টে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হওয়ার মানে হলো, ২০২২ সালে আগস্টে একজন মানুষ যে পণ্য ও সেবা ১০০ টাকায় কিনতেন, চলতি বছরের আগস্ট মাসে একই পণ্য কিনতে তাঁর খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৯২ পয়সা।
মূল্যস্ফীতি হলো একধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিব সবার জীবনযাত্রার ওপর চাপ বাড়ায়।