২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সত্য কথা বলার সাহসী একজন মানুষের বিদায়

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

সত্য কথা বলার অসম সাহস—এটাই খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের সবচেয়ে বড় পরিচয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই পরিচয় তিনি সযত্নে চর্চা করেছেন। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে সত্যকণ্ঠ থেকে কখনো দূরে থাকেননি, কৌশল করে এড়িয়েও যেতেন না। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে আর্থিক খাত নিয়ে কথা বলার সবচেয়ে সাহসী মানুষটি চলে গেলেন। তিনি ছিলেন দেশের ব্যাংকিং জগতের বাতিঘর।

১৯৬৩ সালে তৎকালীন হাবিব ব্যাংক লিমিটেডে প্রবেশনারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়ে ব্যাংকিং জীবন শুরু করেছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকিং জীবন শেষ করেন। তবে শেষ দিন পর্যন্ত দেশের আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনিই। দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসের প্রায় প্রতিটি ঘটনার সাক্ষী ছিলেন, অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে যেতে হয়েছে তাঁকে, এরশাদ আমলে শিকার হয়েছেন হয়রানির। কিন্তু সত্য কথা বলা থেকে কখনো পিছপা হননি।

১৯৯৩ সালের দিকে যখন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হলেন, তখন আমিও মাত্রই সাংবাদিকতা শুরু করেছি। সেই থেকে পরিচয়। এরপর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে—তিনি চাকরিজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন, নিজেকে জড়িত রেখেছেন নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে। কিন্তু নিজেকে তিনি একদমই বদলাননি, সাহস নিয়ে সত্য কথা বলে গেছেন। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মানেই একজন সৎ ও সাহসী মানুষের প্রতিকৃতি—এটাই মানুষ সব সময় মনে রাখবে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ তখনো কৃষি ব্যাংকের এমডি। আর রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোস্তফা আমিনুর রশীদ। তৎকালীন বিএনপি সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম ও ঋণের অর্থ আত্মসাতের একের পর অভিযোগ আসছিল মোস্তফা আমিনুর রশীদের নামে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করলেও রাজনৈতিক চাপে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিল না; কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে বরং অগ্রণী ব্যাংকের এমডির স্বাভাবিক অবসরে যাওয়ার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সাংবাদিক হিসেবে বিশেষ এক সূত্র থেকে সেই প্রতিবেদন হাতে এলে অগ্রণী ব্যাংকের অনিয়ম নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন করি। এর মধ্যেই অবসরে চলে যান মোস্তফা আমিনুর রশীদ, আর কৃষি ব্যাংক থেকে অগ্রণী ব্যাংকে আসেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। এসেই তিনি শক্ত হাতে অগ্রণী ব্যাংকের হাল ধরেন। আগের এমডি প্রায় ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে ব্যাংকটিকে আবার ভালো অবস্থানে নিয়ে আসেন।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান ১৯৯৭ সালে। সে সময় গভর্নর ছিলেন লুৎফর রহমান সরকার। ১৯৯৮ সালে গভর্নর পদে যোগ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। সম্ভবত এ দুজনেই ছিলেন বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেরা জুটি। ব্যাংক খাতের অনেক অনিয়ম ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা।

কিন্তু তখনো দৈনিক সংবাদে অগ্রণী ব্যাংকের চরম সেসব অনিয়মের সংবাদ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছিল। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ মানেই গ্রাহকদের কাছে আস্থা হারানো, আমানত তুলে নেওয়ার প্রবণতা। এ কারণে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের পক্ষে ব্যাংক পুনর্গঠনের কাজটি সহজ হচ্ছিল না। এক সন্ধ্যায় তিনি অফিসে ফোন করলেন। বলেছিলেন, আমাদের কাজ সত্য ও সঠিক সংবাদ প্রচার করা, সেটা নিয়ে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। তবে তাঁর একটাই অনুরোধ, আমরা যেন ব্যাংকের লোগো ব্যবহার না করি। সেই থেকে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, যা ছিল শেষ দিন পর্যন্ত।

অগ্রণী ব্যাংকের পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এমডি হয়ে যান সোনালী ব্যাংকে। সে সময় ফজলুর রহমান নামের নারায়ণগঞ্জের একজন আলোচিত ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যেমন ফেরত দিতেন না, তেমনি সেই অর্থ দুহাতে বিলাতেনও। ঘুষ দিয়ে কাজ আদায়ে তাঁর বিশেষ দক্ষতা ছিল। তাঁর দেওয়া উপহার পেয়েছেন—এমন মানুষের তালিকা বেশ লম্বা। সোনালী ব্যাংকে যোগ দিতেই প্রথা মেনে সেই ফজলুর রহমান বেশ কিছু উপহার পাঠান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের কাছে। ব্যাংকের একজন এমডি কত টাকার উপহার নিত পারেন, সেই লিখিত বিধি সংযুক্ত করে সমস্ত উপহার ফেরত পাঠিয়েছিলেন তিনি। আর এর একটি অনুলিপি রেখে দিয়েছিলেন ফজলুর রহমানের ঋণের ফাইলে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান ১৯৯৭ সালে। সে সময় গভর্নর ছিলেন লুৎফর রহমান সরকার। ১৯৯৮ সালে গভর্নর পদে যোগ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। সম্ভবত এ দুজনেই ছিলেন বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেরা জুটি। ব্যাংক খাতের অনেক অনিয়ম ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। তখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ব্যাংকিং জীবনে ওই একবারই অনিয়মের বিরুদ্ধে কিছুটা রাজনৈতিক সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর সামনেই এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন ব্যাংক খাত মাফিয়াদের দখলে। একজন ডেপুটি গভর্নরের সেই বক্তব্য যথেষ্ট আলোচিত হয়েছিল। অনেকেই তাঁর বিপদের আশঙ্কা করেছিলেন। কিন্তু সত্য প্রকাশে ছিলেন অবিচল। সে সময়ে ব্যাংক খাতে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট শ্রমিক ইউনিয়নের দৌরাত্ম্য ছিল প্রবল। সরকার এ নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করলে তিনি হন এর প্রধান। অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করেছিলেন তিনি। সেই প্রতিবেদনও ছিল যথেষ্ট সাহসী। যদিও রাজনৈতিক কারণে তৎকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রতিবেদনটি বাস্তবায়নের অনুমোদন পায়নি।

২০১০ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর তাঁকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সরকার। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন তিনি। এরপরই শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রোষানলে পড়েন তিনি। সরকার থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হননেরও অনেক চেষ্টা করা হয়।

তবে আরেকটি তদন্ত কমিটির প্রধান হয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। ২০১০ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর তাঁকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সরকার। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন তিনি। এরপরই শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রোষানলে পড়েন তিনি। সরকার থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হননেরও অনেক চেষ্টা করা হয়। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ নিজেই এই প্রতিবেদকে বলেছিলেন, ‘কারসাজির সঙ্গে জড়িত একজন দেখা করেছিলেন তাঁর সঙ্গে। কথাবার্তা শেষ করে ফিরে আসার সময় তিনি চেয়ারম্যানকে ঠান্ডা গলায় বলেছিলেন, দেখেন কী খেলা দেখাই।’ তারপরও নিজের বক্তব্য থেকে একটু সরে আসেননি তিনি।

২০০০ সালে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ যখন পূবালী ব্যাংকে যোগ দেন, তখন এটি ছিল একটি দুর্বল ব্যাংক। ছয় বছর তিনি এই ব্যাংকের এমডি ছিলেন। এখন যে পূবালী ব্যাংক দেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম সেরা ব্যাংক, এর কৃতিত্ব খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের। এই ব্যাংকে যোগ দেওয়ার দিন থেকেই নিজের কক্ষে বঙ্গবন্ধুর একটি বড় ছবি স্থাপন করেছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার এলেও সেই ছবি তিনি সরাননি। শেষ দিন পর্যন্ত ছবিটি ছিল। বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন তিনি। তারপরও গত এক দশকে ব্যাংক খাতের বিশৃঙ্খলা, সুশাসনের অভাব, ঋণখেলাপিদের প্রতি আনুকূল্য প্রদর্শন ও সামগ্রিক নাজুক অবস্থার চরম সমালোচক ছিলেন তিনি। তিনি বারবার মনে করিয়ে দিতেন যে একটি ব্যাংকের ৯০ শতাংশ মালিকানা মূলত আমানতকারীদের, বাকি ১০ শতাংশের মালিকানা উদ্যোক্তাদের। সুতরাং ব্যাংক পরিচালিত হবে আমানতকারীর স্বার্থে আর তা দেখভাল করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এর চরম ব্যত্যয় হচ্ছে বলে তিনি এর চরম সমালোচনা করতেন, গঠনমূলক অনেক পরামর্শও দিয়েছেন।

সাংবাদিকদেরও প্রিয় মানুষ ছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। কারণ, সত্য প্রকাশে তাঁর কোনো দ্বিধা ছিল না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে, অথবা প্রভাবশালীদের রোষানলের পরার ভয়ে অনেকই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইতেন না। কিন্তু আর্থিক খাত নিয়ে সত্য ও সঠিক কথা বলার ক্ষেত্রে কখনোই তিনি পিছু হটেননি।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সত্যিকারের একজন গণমাধ্যমবান্ধব মানুষ ছিলেন। আরও অনেকের মতো অবসর নেওয়ার পরে তিনি এই পরিচয়ে পরিচিত হননি। তিনি যখন বড় দায়িত্বে ছিলেন, তখনো ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য না লুকিয়ে বরং প্রচার পাওয়াকেই সঠিক মনে করতেন। এমন অনেক হয়েছে, দেশের ও ব্যাংক খাতের স্বার্থে অনেক অনিয়মের খবর তিনি আগে থেকেই দিয়ে দিতেন। তিনি তখন বাংলাদেশ ব্যাংকে। একদিন খবর পাঠালেন। সোনালী ব্যাংক একজন ঋণখেলাপিকে বড় অঙ্কের ঋণ দিচ্ছে—এ খবর তিনি পেয়েছেন। পরদিন পর্ষদে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উঠবে। এ নিয়ে সংবাদ ছাপা হলে অনিয়মটি বন্ধ করা সম্ভব হবে। এ রকম অনেক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এই প্রতিবেদকেরই আছে। এমনকি আশির দশকেও প্রভাবশালী ঋণখেলাপিদের অনেক তথ্যের উৎস ছিলেন তিনি। ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্য নিয়ে সারাটা জীবন সোচ্চার ছিলেন।

সাংবাদিকদেরও প্রিয় মানুষ ছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। কারণ, সত্য প্রকাশে তাঁর কোনো দ্বিধা ছিল না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে, অথবা প্রভাবশালীদের রোষানলের পরার ভয়ে অনেকই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইতেন না। কিন্তু আর্থিক খাত নিয়ে সত্য ও সঠিক কথা বলার ক্ষেত্রে কখনোই তিনি পিছু হটেননি।

গত ২৭ জুন প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রকাশিত খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের লেখা একটি বিশ্লেষণের শিরোনাম ছিল, ‘ব্যাংকে আগেও মাফিয়া ছিল, এখন বেড়েছে’। সেখানে তিনি অকপটে সাম্প্রতিক সময়ে নেওয়া বেশ কিছু সরকারি সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। ছাপা হওয়ার আগের রাতে ফোন করে জানতে চেয়েছিলাম, এতে তাঁর কোনো সমস্যা হবে কি না। তিনি এক কথায় উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, কোনো কিছুতে ভয় পান না। তা ছাড়া কথাগুলো বলা দরকার বলেই তিনি মনে করেন। সুতরাং তাঁর কোনো সমস্যা নেই।

আরেকটা উদাহরণ দিই। দেশের বাইরে সিকদার গ্রুপের বিপুল সম্পদ নিয়ে প্রথম আলোয় একটি বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হলো গত ৯ জুন। সেখানে বক্তব্য দিয়েছিলেন খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। পরদিন প্রভাবশালী এই গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করে বলা হলো, ‘ইব্রাহিম খালেদ দেশের প্রথিতযশা ব্যাংকার, তিনি সিকদার গ্রুপের তথা সিকদার পরিবারের পটভূমি না জেনেই বিদেশে কীভাবে টাকা গেল, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, যা কেবলই দুঃখজনক। পরবর্তী সময়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে ইব্রাহিম খালেদ তাঁর মামা সুলাইমান খান মজলিসের কাছে ফোনের মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়ার কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।’ এরও প্রতিবাদ করে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ প্রথম আলোকে বললেন, ‘সুলাইমান খান মজলিস সাহেব নামে আমার কোনো মামা নেই। উনি একটি ব্যাংকের এমডি ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। আর মাফ চাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। আমার বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ সত্য। এখনো সেই মন্তব্যে অটল আছি। আমার মনে হয়, সিকদার গ্রুপ আমাকে ব্ল্যাকমেল করতে চাইছে।’

অত্যন্ত সাহসী এই মানুষ প্রতিদিন নিয়ম করে সেগুনবাগিচায় কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলার কার্যালয়ে যেতেন। তিনি এর পরিচালক ছিলেন। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঠিক পথে রাখতে তিনি শিশু-কিশোরদের সংগঠিত করাকে গুরুত্ব দিতেন। আর্থিক খাতসহ সুশাসনের অনেক বিষয় নিয়ে তিনি হতাশ থাকলেও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন।

দেশে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার মতো মানুষ এমনিতেই খুব কম; যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, তিনিও চলে গেলেন।