ছুটি শেষে বন্দরে জাহাজজট
ঈদের ছুটি শেষে বন্দর জেটিতে ভেড়ানোর জন্য অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বন্দর চত্বরে কনটেইনারের সংখ্যাও।
অবশ্য অন্যবারের তুলনায় এবার জাহাজজটের মাত্রা কিছুটা কম।
বন্ধের কারণে জট তৈরি হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে মনে করছেন বন্দর কর্মকর্তারা। কারণ, তিন দিনের ছুটি শেষে কলকারখানা খুলতে শুরু করায় বন্দর থেকে আমদানি পণ্য নিতে শুরু করেছেন আমদানিকারকেরা। তাতে এক সপ্তাহের মধ্যে বাড়তি চাপ কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বন্দরে ঈদের দিন জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো ও খালাস বন্ধ থাকে। তবে ঈদের আগে ও পরে ছুটির সময় পরিচালন কার্যক্রম সচল থাকে। এ সময় পরিচালন কার্যক্রম সচল থাকলেও সাধারণত পণ্য খালাস হয় না। তাতে বন্দর চত্বরে কনটেইনারের সংখ্যা বেড়ে যায়। এবার বন্দর চত্বরে কনটেইনারের সংখ্যা বেড়ে উন্নীত হয়েছে ৪০ হাজারে।
জানতে চাইলে বন্দরসচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ছুটিতে যাতে কনটেইনার নেওয়ার হার না কমে, সে জন্য এবার আগেভাগেই বন্দর থেকে চিঠি দিয়ে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। ছুটির সময় তিন দিন পণ্য নেওয়ার হার কম থাকলেও গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার গড়ে চার হাজারের বেশি কনটেইনার পণ্য খালাস নিয়েছেন আমদানিকারকেরা। তাই এবার সমস্যা হবে না।
বন্দরের তথ্যে দেখা যায়, বন্দরের বহির্নোঙরে এখন কনটেইনারবাহী জাহাজ রয়েছে ১০টি। এসব জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। জেটিতে যেসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস ও বোঝাই হচ্ছে, সেগুলো বন্দর ত্যাগ করলে অপেক্ষমাণ জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারে। প্রতিদিন গড়ে তিনটি জাহাজ বন্দর জেটি ছেড়ে যায়। তাতে অপেক্ষমাণ তিনটি জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারে। কনটেইনার ছাড়া সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ কমবেশি ১০-১২টি অপেক্ষায় থাকছে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, বহির্নোঙরে আসার পর প্রতিটি জাহাজকে এখন জেটিতে ভেড়ানোর জন্য কমবেশি তিন দিন অপেক্ষা করতে হয়। সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজের ক্ষেত্রে অপেক্ষার সময় আরও বেশি।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, সাড়ে ১৩ বছর ধরে নতুন কোনো জেটি নির্মিত না হওয়াই বন্দরের মূল সমস্যার কারণ। বন্দর দিয়ে কনটেইনার ও সাধারণ পণ্য পরিবহন বাড়লেও ২০০৭ সালের পর নতুন কোনো জেটি হয়নি। বন্দরে এখন ১৮টি জেটিতে একসঙ্গে ১৬-১৭টি জাহাজ ভেড়ানো যায়। এ সীমিতসংখ্যক জেটি দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। পণ্য পরিবহন বাড়লে জাহাজ বা কনটেইনারের জট ঠেকানোর মতো অবকাঠামো নেই।