বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে আমদানি বেড়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ। আর পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার বেড়েছে সাড়ে ১৯ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে দেশে ৫ হাজার ৭২৫ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৫ হাজার ৩২৫ কোটি টাকার পণ্য। তবে এই সময়ে হয়েছিল মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে আমদানি ঋণপত্র সম্পর্কে এসব তথ্য জানিয়েছে। এতে দেখা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরে চাল আমদানিতে ৪৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তাজা ও শুকনা ফল আমদানি ৩৯ শতাংশ ও ভোজ্যতেল (ক্রুড অয়েল) আমদানি ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। ওষুধের কাঁচামাল আমদানি প্রায় ২৩ শতাংশ ও পুরোনো জাহাজ আমদানি ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। ওষুধ আমদানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরে তেমন চাল আমদানি হয়নি। তবে গত অর্থবছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার চাল আমদানি হয়েছে। এই কারণে বড় প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। আর অনেক মানুষ অসুস্থ হওয়ার কারণে ওষুধের কাঁচামাল, ওষুধ ও ফলের আমদানি বেড়েছে।
গত অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় টেক্সটাইলের কাপড় ও পোশাক কারখানার সরঞ্জাম। পুরো অর্থবছরে ৭৮০ কোটি ডলারের এসব পণ্য আমদানি হয়েছে। তবে তা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২ দশমিক ৮১ শতাংশ কম। অবশ্য গত অর্থবছরে সুতা আমদানি বেড়েছে। পুরো অর্থবছরে আসে ২৩১ কোটি ডলারের সুতা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি। আর কেমিক্যাল পণ্য আমদানি হয় ৩০৪ কোটি ডলারের, এর মধ্যে কৃষি খাতের সার ১৪৬ কোটি ডলারের। গত অর্থবছরে ওষুধের কাঁচামাল আমদানি হয় ১০৬ কোটি ডলারের ও ওষুধ আমদানি হয় ১৪ কোটি ডলারের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত অর্থবছরে বেশির ভাগ পণ্য আমদানিতে খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে কিছু পণ্যের দাম বাড়ার কারণে খরচ বেড়েছে। আবার আমদানি বাড়ার কারণেও অনেক পণ্যে খরচ বেড়েছে।
গত অর্থবছরে আমদানি খরচ কমেছে, এমন পণ্যগুলো হচ্ছে মসলা, দুগ্ধজাত খাবার, টেক্সটাইলের কাপড় ও পোশাক কারখানার সরঞ্জাম, পেট্রোলিয়াম, তেল ও লুব্রিকেন্ট, কয়লা, কাগজ ও কাগজের বোর্ড ও মূলধনি যন্ত্রপাতি।
ব্যাংকাররা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই হিসাব পুরো অর্থবছরে ঋণপত্র নিষ্পত্তির। এর মধ্যে অনেক ঋণপত্র বেশ আগে খোলা হয়েছিল। করোনার কারণে কোন খাতে কী প্রভাব পড়েছে, তার একটি চিত্র পাওয়া যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে।
এদিকে আমদানিতে তেমন গতি না থাকলেও প্রবাসী আয়ে প্রায় ২০ শতাংশ ও রপ্তানি খাতে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। তাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের আশপাশে।