তিন সংস্থার সমন্বয়হীনতায় রপ্তানির তথ্যে গরমিল: সালমান এফ রহমান
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, রপ্তানির তথ্যে গরমিলের পেছনে সরকারের তিন সংস্থার সমন্বয়হীনতা ছিল। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে আগে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে পারেনি। তবে দেরিতে হলেও বিষয়টির সমাধান হয়েছে। ভবিষ্যতে রপ্তানির তথ্য নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি হবে না।
আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ডিজিটালাইজ করা সংক্রান্ত এক গোলটেবিল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) এই গোলটেবিলের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান। সমাপনী বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ।
সম্প্রতি রপ্তানির তথ্য সংশোধন করা হয়েছে। তাতে গত দুই অর্থবছরের ২০ মাসে প্রায় ২৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় থেকে উধাও হয়ে গেছে। বলা হয়েছে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইপিবি রপ্তানির ভুল তথ্য প্রকাশ করে আসছিল।
এ প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ইপিবি একাধিক প্রক্রিয়ায় রপ্তানির তথ্য সংগ্রহ করে। এর মধ্যে কিছু ভুল ছিল, আর কোনো ক্ষেত্রে ছিল সমন্বয়হীনতা। যেমন অনেক সময় ক্রেতারা বিনা মূল্যে কাপড় পাঠান। সেই কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করলে তাঁরা (ক্রেতারা) কেবল বানানোর মজুরি (সিএমটি) দেন; কাপড়ের মূল্য দেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকে সে অর্থ (রপ্তানি আয়) জমা হয়। কিন্তু ইপিবি পুরো মূল্যই (কাপড়সহ পণ্যের মূল্য) দেখায়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইপিবির তথ্যের পার্থক্য তৈরি হয়েছে। তবে আমি মনে করি, ইপিবি এ ক্ষেত্রে ভুল করেনি, তবে একধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।’
তবে ইপিবি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) থেকে পণ্য রপ্তানির হিসাব দুবার নিয়েছে বলে জানান সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, ‘এটা তারা ভুল করেছে। যাহোক, এ বিষয়ে একটা সমাধান হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন বিভ্রান্তি আর হবে না বলে আশা করছি। সরকারি সংস্থাগুলো সমন্বয় করে কাজ করবে।’
অনুষ্ঠান শেষে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ইপিবির তথ্যের সঙ্গে আমাদের (ব্যবসায়ীদের) রপ্তানির তথ্য মিলছিল না। আমাদের যেখানে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়, সেখানে ইপিবি দেখায় ইতিবাচক। এটি ইপিবি কীভাবে করে, তা আমাদের জানা নেই। ইপিবির তথ্য সংগ্রহের ভুল ঠিক করা প্রয়োজন। এমন ভুলের কারণে দেশের ভাবমূর্তি নেতিবাচক হতে পারে।’