আগস্টের ২৮ দিনে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
দেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহে আবার ঊর্ধমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগস্ট মাসের প্রথম ২৮ দিনে প্রবাসী আয় দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলারের বেশি হয়েছে। ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মধ্যে জুলাই মাসে গত ১০ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয়সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২৮ আগস্ট পর্যন্ত দেশে ২০৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের একই সময়ে ১৪৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। সেই হিসাবে চলতি বছর একই সময়ে ৬৪ কোটি ডলার বেশি প্রবাসী আয় এসেছে।
জুলাই মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল প্রায় ১৯১ কোটি মার্কিন ডলার। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। তবে গত জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকারি ও সাধারণ ছুটি মিলিয়ে গত ১৯ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। এ ছাড়া টানা ৫ দিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও ১০ দিন মোবাইলে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এ কারণে দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈদেশিক লেনদেন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন গণ–আন্দোলনে রূপ নেওয়ার পর আগস্ট মাসের শুরুতে দেশে সহিংসতা দেখা দেয়। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন। আরও তিন দিন পর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় এবং ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
গত জুন মাসে ২৫৪ কোটি ডলার আয় দেশে পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা। জুনে দেশে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল, তা ছিল একক মাসের হিসাবে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে। কোভিড মহামারির সময়ে একপর্যায়ে দেশে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যায়। একই সাথে প্রবাসী আয় ও রপ্তানিতে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় রিজার্ভ দ্রুত কমতে থাকে।
সংকট কাটাতে ও রিজার্ভ বাড়াতে প্রবাসী আয়সহ বিদেশ থেকে অর্থ আনতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত কয়েক মাসে এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স দেশে আসার ক্ষেত্রে। তবে জুলাই মাসে সেই ধারায় কিছুটা ছন্দপতন হয়।