খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাজেটের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ
সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী মনে করেন, দেশের অর্থনীতিতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ এবারের বাজেটের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের মতো হবে। অথচ বিষয়ে কোনো ঘোষণা নেই। তিনি আরও বলেন, সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট উত্থাপন করা হয়েছে, তার দর্শনকে দর্পণে রূপান্তরিত করার তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
আজ সোমবার নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘অর্থনীতির চালচিত্র ও প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সাবেক অর্থসচিব ও বাংলাদেশের সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মুসলিম চৌধুরী এ কথাগুলো বলেন। রাজধানীর এক হোটেলে এ আলোচনা সভা হয়।
খেলাপি ঋণের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মুসলিম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু নীতির কারণে বহু ঋণ খেলাপি হিসাবে তালিকাভুক্ত হয় না। যেমন ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়ে (ডাউন পেমেন্ট) ঋণ নিয়মিত করা হয়। এ ধরনের ঋণ খেলাপি ঋণের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয় না। আবার আদালতে অনিষ্পন্ন থাকায় বিপুল পরিমাণ ঋণের অর্থ আটকে আছে, তা-ও খেলাপি ঋণে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, সব মিলিয়ে চার থেকে পাঁচ লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের মধ্যে অনেক ঋণের বিপরীতে প্রকল্পও নেই। শুধু কাগজের ওপর ভিত্তি করে এসব ঋণ দেওয়া হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে মুসলিম চৌধুরী বলেন, দুই-তৃতীয়াংশ রাজস্বই আসে পরোক্ষ কর থেকে। এনবিআরকে বিশাল লক্ষ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এনবিআরের হাতে বিকল্প নেই। তাই রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির জন্য যেখানে কর বসানো যায়, সেখানেই কর বসিয়ে দেওয়া হয়। রাজস্ব খাতে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংস্কার প্রসঙ্গে মুসলিম চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক সরকারকে মেয়াদের প্রথম ও দ্বিতীয় বছরের মধ্যে সাহসী ও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু সরকারের মধ্যে এ বিষয়ে তেমন অঙ্গীকার দেখা যাচ্ছে না। তিনি মনে করেন, প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন করা জরুরি।