অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ডলারের স্বল্পতা কেটেছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সব দ্বিধা কেটে গেছে।
ঢাকায় সচিবালয়ে গতকাল রোববার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রাক্–বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সব দ্বিধা কেটে গেছে। যাঁরা দেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হবে ভেবেছিলেন, তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। খবর বাসসের।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি নিয়ে একটা সন্দেহ ছিল, দ্বিধা ছিল। সেগুলো কেটে গেছে। এরপর এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। তাঁরা বলেছেন, ‘আমরা অপেক্ষা করছি তোমাদের প্রস্তাবের জন্য। তোমরা আগে প্রস্তাব দাও, টাকা আমরা দেব, টাকার কোনো অভাব নেই। কাজেই এ রকম একটা নিশ্চয়তা পাওয়ার পর আর তো কোনো সন্দেহ নেই। কোনো দ্বিধা নেই। আমরা যেভাবে বাজেট তৈরি করি, সেভাবে এবারও বাজেট তৈরি হচ্ছে।’
মাহমুদ আলী আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিপক্ষ বলেছিল, আরে এই তো বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হলো। শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে? হয় নাই তো। আমরা টিকে আছি। আগামী বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সব পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ দাম, কোনোটা বাড়ছে, কোনোটা কমছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি যেভাবে চলে সেভাবে চলছে।’
ইআরএফের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রমুখ। তাঁরা আগামী ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে বাস্তবায়নের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব তুলে ধরেন। সেসব প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস দেন অর্থমন্ত্রী।
ইআরএফের প্রতিনিধিরা আগামী বাজেটে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সয়াবিন তেল, চিনি ও মসুর ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ, পোলট্রি ও গরু–ছাগলের খামারিদের আর্থিক সহায়তা প্রদান; মাছ, পোলট্রি ও গরু–ছাগলের খাবার আমদানিতে শুল্ক কমানো; শিল্প কারখানায় প্রয়োজন অনুসারে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে বলেন তাঁরা।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নেতারা বলেন, রড–সিমেন্ট ও কংক্রিটের মতো নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে আবাসন খাতে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সে জন্য এ খাতে সরকারের সতর্ক তদারকি দরকার, যাতে সাধারণ মানুষ কম খরচে আবাসনের সুযোগ পান। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাশ্রয়ে আগামী তিন বছর নতুন করে মেগা প্রকল্প না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে নেতারা ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বড় সেতুর টোল কমানোর আহ্বান জানান।