বছরে ১৪২ কোটি টাকার করলার বীজ বিক্রি হচ্ছে
দেশে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বীজ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে শীর্ষ চাহিদা ধানবীজের। আর শাকসবজির বীজে চাহিদার শীর্ষে করলা। এখন প্রতিবছর করলার বীজ বিক্রি হচ্ছে ১৪২ কোটি টাকার। এরপরই বীজ বিক্রিতে শীর্ষে টমেটো। প্রতিবছর ৯৮ কোটি টাকার টমেটোর বীজ বিক্রি হচ্ছে। আর শসার বীজ বিক্রি হচ্ছে ৯৬ কোটি টাকার।
দেশ স্বাধীনের পর হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায় যুক্ত হলেও নব্বই দশকের পর এই খাতে বড় বিকাশ হয়। এরপর অনেক করপোরেট প্রতিষ্ঠান বীজ খাতের সঙ্গে খাতে যুক্ত হয়। পাশাপাশি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীরাও গড়ে তোলেন প্রতিষ্ঠান। ফলে এখন দেশের প্রায় ২০০ ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তবে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গবেষণার মাধ্যমে জাত উন্নয়ন করে বীজ উৎপাদন করছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে ভালো উৎপাদন হয়, এমন বীজ বাজারে মিলছে। যাতে মিটছে স্থানীয় চাহিদা। শাকসবজি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।
বীজ খাতে এখন উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো লাল তীর, ইউনাইটেড, জামালপুর সিড, এসিআই, সুপ্রিম, এআর মালিক, মেটাল, মল্লিকা, ব্র্যাক, বায়ার ক্রপ সায়েন্স, ইস্পাহানি, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার, পারটেক্স সিড, কৃষিবিদ সিড, গেটকো ও ব্যাবিলন সিড।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ সালে দেশে শাকসবজি, ধান, গম, ভুট্টা, পাট, চা, তামাকসহ বিভিন্ন বীজ বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার ৯২৪ কোটি টাকার। এর মধ্যে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বীজ সরবরাহ করেছে বিভিন্ন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ও আমদানিকারকেরা। আর বাকি বীজ সরবরাহ করেছেন কৃষক ও স্থানীয় সংগ্রহকারকেরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বীজ প্যাকেটজাত ও কৃষকদের বীজ হয় খোলা।
বীজের বাজারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। শাকসবজির বীজ; ধান, গমসহ অন্যান্য বীজ। বছরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলে শাকসবজি বীজ বিক্রি করছে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। হাইব্রিড ধানের বীজ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার কোটি টাকার।
সবজির বীজ বিক্রিতে দেশে শীর্ষ লাল তীর, প্রায় ৩২ শতাংশ। এরপর মেটাল ১৩ শতাংশ, জামালপুর সিড ১২ শতাংশ, এসিআই ৮ শতাংশ, ইউনাইটেড সিড ৫ শতাংশ; সুপ্রিম সিড, মল্লিকা সিড ও এ আর মালিক ৩ শতাংশ করে।
ধানের বীজ বিক্রিতে দেশে শীর্ষ সুপ্রিম সিড, প্রায় ১৮ শতাংশ। দেশের বিক্রি হওয়া প্যাকেটজাত ধানবীজের মধ্যে বায়ার ক্রপসের ৯ শতাংশ, এসিআইর ৮ শতাংশ, ব্র্যাকের ৮ শতাংশ, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের ৮ শতাংশ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ৬ শতাংশ, লাল তীরের ৫ শতাংশ, ইস্পাহানির ৪ শতাংশ, পারটেক্স সিডের ২ শতাংশ।
আর বীজ আমদানিতে শীর্ষে এ আর মালিক, প্রায় ১৮ শতাংশ, ইউনাইটেড ১৭ শতাংশ, মাসুদ সিড ১২ শতাংশ, মল্লিকা ও সুপ্রিম ৯ শতাংশ করে, জামালপুর সিড ৫ শতাংশ, লাল তীর ৩ শতাংশ, কাশেম সিড ৩ শতাংশ, এসিআই ৩ শতাংশ, গেটকো ২ শতাংশ।
খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ২০২১ সালে লাল তীর সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার, ইউনাইটেড আড়াই শ কোটি টাকা, ব্র্যাক দেড় শ কোটি টাকা, সুপ্রিম ১২০ কোটি টাকা, এ আর মালিক ১২০ কোটি টাকা, এসিআই ১১০ কোটি টাকা, মেটাল ৬০ কোটি টাকার বীজ বিক্রি করছে।