কীভাবে খুলবেন ব্যাংক হিসাব
নিজের একটি ব্যাংক হিসাব থাকবে, এটা সবারই কাম্য। তিনি যেকোনো শ্রেণি, পেশা ও আয়ের মানুষ হোন না কেন। তবে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মাত্র ৫০ শতাংশ মানুষের ব্যাংক হিসাব আছে। আর বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাব ধরলে ৭০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সেবার আওতায় এসেছে।
যদিও ব্যাংক হিসাব ও এমএফএস হিসাব এক নয়। কারণ, এমএফএস মূলত টাকা স্থানান্তর প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে কিছু কেনাকাটা ও বিল পরিশোধ করা যায়। এসব হিসাবে আলাদাভাবে কোনো সঞ্চয় স্কিম নেই। ফলে সঞ্চয়ের প্রবণতা গড়ে তুলতে ব্যাংক হিসাবের বিকল্প নেই। আবার আর্থিক জ্ঞান বাড়াতেও ব্যাংক হিসাব প্রয়োজন।
তাই আজ আমরা তুলে ধরব কীভাবে আপনি ব্যাংক হিসাব খুলবেন। একটি হিসাব খোলার মাধ্যমে আপনার সঙ্গে ব্যাংকের সম্পর্ক শুরু হবে। প্রথমে আপনি ছোট অঙ্কের টাকা জমা করবেন, একসময় প্রয়োজনে কিছু ঋণ নেবেন। এটাই ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম-আমানত নেওয়া ও ঋণ দেওয়া।
তাহলে জেনে নিই, ব্যাংক হিসাব খুলতে কী প্রয়োজন। আগের চেয়ে ব্যাংক হিসাব খোলা কিন্তু এখন বেশ সহজ হয়েছে। তবে যতই সহজ হোক না কেন, কিছু তথ্য, ছবি তো দিতেই হবে। এ জন্য প্রয়োজন আপনার নিজের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), নমিনির ছবি ও এনআইডি এবং ওই ব্যাংকে হিসাব রয়েছে এমন একজন পরিচয়দানকারী। সঙ্গে সবার স্বাক্ষর তো লাগবেই। জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক যোগাযোগ করবে, এমন একজনের নাম-ঠিকানাও দিতে হবে।
প্রতিটি হিসাব খোলার সময় গ্রাহক পরিচিতি তথ্য (কেওয়াইসি) জমা দিতে হয়। এখানে নাম-পরিচয়ের পাশাপাশি পেশা, অর্থের উৎস, মাসিক আয় ও ব্যয়ের তথ্য দিতে হবে। প্রয়োজন হলে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নম্বরও জমা নেয় কিছু কিছু ব্যাংক।
হিসাব খোলার ফরমেই দিতে হবে আপনি কী কাজে হিসাবটি ব্যবহার করতে চান। ওই হিসাবে কী পরিমাণ লেনদেন হবে, প্রতি মাসে নগদ ও চেকে কত জমা-উত্তোলন হবে, তার তথ্যও দিতে হবে।
হিসাব খোলার জন্য এসব তথ্যই যথেষ্ট, তা নয়। প্রতিটি হিসাব খোলার সময় গ্রাহক পরিচিতি তথ্য (কেওয়াইসি) জমা দিতে হয়। এখানে নাম-পরিচয়ের পাশাপাশি পেশা, অর্থের উৎস, মাসিক আয় ও ব্যয়ের তথ্য দিতে হবে। প্রয়োজন হলে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নম্বরও জমা নেয় কিছু কিছু ব্যাংক। ই-টিআইএন জমা দিলে সুদের ওপর ৫ শতাংশ কর ছাড় পাওয়া যায়। তবে এখন কিছু কিছু ব্যাংক ইলেকট্রনিক কেওয়াইসিও চালু করেছে। বিশেষ করে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায়। এর ফলে ৫ মিনিটেই ব্যাংক হিসাব খুলে যাচ্ছে।
হিসাব খোলার সময়ই আপনি কী কী সেবা নেবেন তার চাহিদা দিতে পারেন। যেমন এটিএম কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস অ্যালার্ট। আর একটি হিসাব খোলার জন্য আপনাকে কতবার স্বাক্ষর করতে হবে, তার হিসাব নেই।
প্রতিটি মানুষের ব্যাংক হিসাব থাকা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের আর্থিক লেনদেন ও চাহিদা মেটাতে পারেন। তবে আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্ক ৫০ শতাংশ মানুষের হিসাব রয়েছে।
তবে এখন বেশির ভাগ ব্যাংক দুই পাতার হিসাব খোলার ফরম চালু করেছে। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই একটি গর্বিত ব্যাংক হিসাবের মালিক হয়ে যেতে পারেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে অনেক ব্যাংক ঘরে বসে ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ দিয়েছে। এতে অনলাইনেও এসব ছবি ও তথ্য জমা দিয়ে হিসাব খোলা যাচ্ছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা সরেজমিনে যাচাই করে হিসাব খোলার চূড়ান্ত অনুমোদন দিচ্ছেন।
ব্যাংক হিসাবের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি মানুষের ব্যাংক হিসাব থাকা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের আর্থিক লেনদেন ও চাহিদা মেটাতে পারেন। তবে আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্ক ৫০ শতাংশ মানুষের হিসাব রয়েছে। এটা বাড়াতে হবে। এ জন্য ব্যাংক হিসাব খোলা আরও সহজ করা প্রয়োজন। ইতিমধ্যে অনেকটা সহজ হয়েছে।