আইএমএফ ও এডিবির ঋণে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
১৫ ডিসেম্বর আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার বৈদেশিক মজুতে যোগ হয়েছে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ঋণ দিয়েছে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের কিস্তির অর্থ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে। মোট বা গ্রস রিজার্ভ বেড়ে এখন হয়েছে ২ হাজার ৫৮২ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার।
আর আইএমএফের বিপিএম ৬ হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৪০ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। তবে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ কত, তা জানায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক গতকাল বোরবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন। ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে মোট বা গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৪৬৬ কোটি) ডলার। অন্যদিকে বিপিএম ৬ হিসাব পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ১৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৯১৩ কোটি) ডলার।
মেজবাউল হক জানান, ১৫ ডিসেম্বর আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার ও এডিবির দেওয়া ঋণের ৪০ কোটি ডলার বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে যোগ হয়েছে। এতে রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় বর্তমানে ৫০ মিলিয়ন (৫ কোটি) ডলার এবং গত জুন পর্যন্ত আইএমএফের ঋণ রয়েছে ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন (৩৩৭ কোটি) ডলার। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর বিদেশি মুদ্রা ক্লিয়ারিং (এফসি) হিসাবে লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার। এসব দায় বাদ দিয়ে রিজার্ভের হিসাব করতে পরামর্শ দেয় আইএমএফ।
বাংলাদেশকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৭৮ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে হবে। আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য নতুন এই লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের এখন নিট রিজার্ভ আছে ১ হাজার ৬০০ কোটি বা ১৬ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি।
আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা কার্যত কমিয়েছে। কারণ, বছরের শুরুতে ডিসেম্বরের জন্য লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ২ হাজার ৬৮০ কোটি ডলার। নতুন লক্ষ্যমাত্রা আগের চেয়ে ৯০০ কোটি ডলারের মতো কম। আইএমএফের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে বিশদ পর্যালোচনা রয়েছে।
এতেই বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ সংরক্ষণের নতুন লক্ষ্য জানানো হয়। এর আগে সংস্থাটি গত জুনের জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল, যা বাংলাদেশ পূরণ করতে পারেনি। তাতে অবশ্য আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। ১২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ প্রায় ৬৯ কোটি ডলার অনুমোদন করে বহুপক্ষীয় সংস্থাটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়লেও দীর্ঘ সময় ধরে যে ডলার–সংকট চলছে, তা এখনো কাটেনি। ডলারের যে আনুষ্ঠানিক দর, ব্যাংকগুলো তার চেয়ে বেশি দামে মার্কিন এই মুদ্রা কিনছে। ফলে আমদানিকারকদেরও বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, ডলারের এই দামের প্রভাব আমদানি করা পণ্যের মূল্যে দেখা যাচ্ছে।