আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধানের সীমা তুলে নিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধানের (স্প্রড) সীমা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধান ছিল সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ, যদিও সুদহারের নতুন পদ্ধতির কারণে এখন তা সীমার নিচেই আছে। ঋণের সুদহার হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়েছে। সে জন্য সুদহার ব্যবধানের সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে প্রতি মাসে আমানত ও ঋণের সুদহারের তথ্য আগের মতো নিয়মিত কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে।
উৎপাদনশীল খাতসহ বিভিন্ন খাতে ঋণের সুদহার যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের জন্য ক্রেডিট কার্ড ও ভোক্তাঋণ ছাড়া অন্যান্য খাতে ঋণ ও আমানতের সুদহারের গড় ব্যবধান ৪ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১ জুলাই থেকে ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে নির্ধারিত মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণের পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। যে পদ্ধতির ভিত্তিতে এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটি স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সুদহার নির্ধারণের নতুন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারিত হওয়ায় সুদহারের আকস্মিক উল্লম্ফন অর্থাৎ অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে উৎপাদনশীল খাতসহ সব খাতে ঋণের সুদহার যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে। তারল্য পরিস্থিতির বিবেচনায় ঋণের সুদহারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমানতের সুদহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্প্রেডের সীমা নির্ধারণের আবশ্যকতা নেই বলে দেখা যায়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, দক্ষ ঋণ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার–ব্যবস্থা প্রবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাধ্যতামূলক স্প্রেড সীমার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হওয়ায় ঋণ ও আমানতের গড় সুদহারের নির্দেশনাসহ এ–সংক্রান্ত সব নির্দেশনা রহিত করা হলো। সেই সঙ্গে ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের গড় সুদহারের ব্যবধানসংক্রান্ত রিপোর্টিং যথারীতি চলমান থাকবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকঋণের সর্বোচ্চ সুদহার বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে প্রতি ছয় মাসে একবারই সুদহার বাড়ানো যাবে। অক্টোবরে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্প্রেডের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হয়। প্রাক্-জাহাজীকরণ রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লিঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্প্রেডের সঙ্গে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করা যায়।