মুদ্রানীতি তৈরিতে কতটা স্বচ্ছ বাংলাদেশ ব্যাংক
মুদ্রানীতিতে হঠাৎ বদল এনেছিলেন গভর্নর। তারপর মুদ্রানীতি কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। তারপরও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাফল্য নেই। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবই কি এর কারণ?
নতুন আরেকটি মুদ্রানীতির সময় হয়ে গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৮ জুলাই নতুন মুদ্রানীতির ঘোষণা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যতটা স্বচ্ছতার সঙ্গে মুদ্রানীতি তৈরি করছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কি সেভাবে করছে? আসলে এখানে স্বচ্ছতার ঘাটতি প্রকট। আবার মুদ্রানীতি নিয়ে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে যতভাবে জবাবদিহি করতে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের জবাবদিহির মাত্রা সেখানে শূন্য। ফলে সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। আর এ জন্য জবাবদিহিও করতে হয় না। ফলে কমে না মূল্যস্ফীতি।
মুদ্রানীতি কেন গুরুত্বপূর্ণ
অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতি সুদহারকে প্রভাবিত করে। একজন ব্যবসায়ী কত সুদহারে ঋণ পাবেন, গাড়ি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার খরচ বাড়বে না কমবে, একজন আমানতকারী কী হারে মুনাফা পাবেন—সবই ঠিক হয় মুদ্রানীতির মাধ্যমে। এককথায় বলা যায়, মানুষ কতটা বিনিয়োগ করবে আর কতটা সঞ্চয় করবে, তা ঠিক করে দেয় মুদ্রানীতি। আর এসবের ওপরই নির্ভর করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও মূল্যস্ফীতি।
একটি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। এই স্থিতিশীলতা অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। ঠিক এ কাজই করে মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতি এতটা গুরুত্বপূর্ণ বলেই সারা বিশ্ব তাকিয়ে থাকে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকব্যবস্থা ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেডের সিদ্ধান্তের ওপর। সুতরাং মুদ্রানীতি এখন কেবল একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বৈশ্বিক বিষয়। এ কারণেই বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে আলোচনা হয় সবচেয়ে বেশি। কেননা, এই তিনের অভাবে ভুল নীতি প্রণয়ন করা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাকিয়ে থাকে রাজনৈতিক সরকারের দিকে, নীতি নিয়ে খোলামেলা কোনো আলোচনা হয় না, থাকে না জবাবদিহির কোনো ব্যবস্থা। ফলে সংকট কমে না, বরং দীর্ঘায়িত হয়। বাংলাদেশ এর বড় উদাহরণ।
এখানে যেভাবে মুদ্রানীতি তৈরি হয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় একটি মুদ্রানীতি কমিটি আছে। সেই কমিটির প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাই এই কমিটির সদস্য ছিলেন। অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের কোনো স্থান ছিল না। এ নিয়ে লেখালেখি হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের অক্টোবরে কমিটি পুনর্গঠন করে। সাত সদস্যের কমিটিতে তিনজন বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁরা হলেন অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা সাদিক আহমেদ এবং পদাধিকার বলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর এম হাবিবুর রহমান, প্রধান অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম।
মুদ্রানীতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বচ্ছতা এটুকুই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এর চেয়ে বেশি কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। যদিও তারা গত ১৫ মে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ‘অবাধ তথ্যপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিতকরণের নিমিত্তে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নিকট সংরক্ষিত সব অর্থনৈতিক তথ্য ও উপাত্ত তার ওয়েবসাইটে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে আসছে।’ অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই মুদ্রানীতি কীভাবে তৈরি হচ্ছে, কমিটি কয়বার বৈঠক করেছে, সেখানে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে, তা জানার কোনো পথ নেই। কমিটির তিন বিশেষজ্ঞ কি বাংলাদেশ ব্যাংকের সব পদক্ষেপে একমত হয়েছিলেন, নাকি ভিন্নমত ছিল, তা–ও জানার কোনো উপায় নেই। অন্য দেশের পরিস্থিতি কিন্তু এ রকম নয়।
তাহলে অন্যরা কী করে
খুব বেশি দূর যেতে হবে না। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ওয়েবসাইটে একটু ঘুরে আসা যাক। মুদ্রানীতি তৈরি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য তারা ২০১৬ সালেই আইন সংশোধন করেছে। এখন মুদ্রানীতি কমিটির সদস্য কারা হবেন, তা কেন্দ্রীয় সরকার গেজেটের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। বর্তমান কমিটির সদস্য ছয়জন। এর মধ্যে তিনজন বাইরের বিশেষজ্ঞ। বাকি তিনজন হলেন আরবিআই গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ মনোনীত একজন কর্মকর্তা।
বিশেষজ্ঞ তিন সদস্য হচ্ছেন ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের অধ্যাপক অসীমা গোয়েল, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক জয়নাথ আর ভর্মা এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাপ্লাইড ইকোনমিক রিসার্চের সিনিয়র পরামর্শক শশাঙ্ক ভিদে।
আরবিআইয়ের ওয়েবসাইটে আরও বলা আছে, তিন বিশেষজ্ঞের মেয়াদ চার বছর। এই কমিটি মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য অর্জনের জন্য নীতি সুদহার নির্ধারণ করবে। এ জন্য কমিটি বছরে কমপক্ষে চারবার বৈঠক করবে। বছরের শুরুতে বৈঠকের তারিখ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকে প্রতি সদস্যের একটি করে ভোটাধিকার থাকবে, অর্থাৎ নীতি সুদহার বাড়বে না কমবে, তা নিয়ে ভোটাভুটি হবে। কেবল তা–ই নয়, পক্ষে বা বিপক্ষে দেওয়া ভোটের ব্যাখ্যাসহ প্রত্যেককে একটি লিখিত বিবৃতিও দিতে হয়।
নতুন মুদ্রানীতি প্রণয়নের আগে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির নানা দিক নিয়ে একাধিক জরিপ ও প্রতিবেদন তৈরি করে আরবিআই। এর মধ্যে রয়েছে ভোক্তার আস্থা জরিপ, খানা বা হাউজহোল্ড মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা সূচক, করপোরেট খাত পরিস্থিতি, ঋণ পরিস্থিতি, শিল্প, কৃষি ও অবকাঠামো খাতের প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ ইত্যাদি। আরবিআই আইন অনুযায়ী, মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক শেষ হওয়ার পর ঠিক ১৪ দিনের মাথায় বিকেল পাঁচটায় বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশ করতে হয়। সেই বিবরণীতে থাকে বৈঠকের সিদ্ধান্ত, কে কোন পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তার তালিকা এবং ভোটের পক্ষে দেওয়া কমিটির সদস্যদের বিবৃতির বিবরণ।
ওয়েবসাইটে এখন গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত বৈঠকের কার্যবিবরণী পাওয়া যাচ্ছে। সেই বিবরণীতে দেখা যাচ্ছে, নীতি সুদহার সাড়ে ৬ শতাংশ রাখার পক্ষে ভোট দিয়েছেন ছয়জন, আর বিপক্ষে দিয়েছেন দুজন। এই দুজন বাইরের বিশেষজ্ঞ। প্রত্যেকের বিবৃতি সেই কার্যবিবরণীতেই রয়েছে।
কেবল ভারত নয়, বেশির ভাগ দেশই এ পদ্ধতিতে মুদ্রানীতি তৈরি করে। তাদের ওয়েবসাইটেই সব তথ্য দেওয়া থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে মুদ্রানীতি কীভাবে ঠিক হয়, তা কেউ জানেন না।
জবাবদিহির জায়গা কোথায়
আরবিআইয়ের ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি বিষয়ে আরও কিছু তথ্য দেওয়া আছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির হার লক্ষ্য অনুযায়ী অর্জিত না হলে কী করতে হবে, তারও বিবরণ আছে। বলা আছে, পরপর তিন প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে আরবিআই কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত আকারে জানাবে। সেই প্রতিবেদনের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নতুন কর্মপরিকল্পনা ও কত দিনের মধ্যে লক্ষ্য পূরণ হবে, সেই সময়সীমা গভর্নরকেই জানাতে হয়।
একইভাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর ও অর্থমন্ত্রীর মধ্যে খোলা চিঠি বিনিময় হয়। সেই চিঠি প্রকাশ করতে হয় ওয়েবসাইটে। ব্যর্থ হলে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরকেও দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দেশের মানুষের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখতে হয়। একইভাবে চিঠি লিখতে হয় কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরকেও। আর তুরস্ক যতই খামখেয়ালি করুক, সেখানেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারকে নিয়মিত প্রতিবেদন দিতে হয়।
মূলত বিশ্বের প্রায় সব দেশেই জবাবদিহির একটা নির্দিষ্ট আইনি কাঠামো আছে। আর এই কাঠামো আছে বলেই বেশির ভাগ দেশই মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সক্ষম হচ্ছে। সফল হতে পারছে না, এমন দেশের তালিকায় আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে স্বচ্ছতার দাবি কেবল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আর বক্তৃতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর জবাবদিহির তো কোনো জায়গাই নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজটা কী
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। তিনি বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সুদহার, মুদ্রানীতি নিয়ে লিখেছেন। তাঁর কথাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক পড়ে দেখতে পারে।
রঘুরাম রাজন লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্য আর্থিক সুস্থিতি, যাতে দেশের মুদ্রামানের ওপর লোকের আস্থা থাকে। শেষমেশ যার অর্থ হলো অল্পমাত্রায় মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে—এই বিশ্বাস রাখা, মুদ্রাস্ফীতি দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে বা টাকার দাম বাড়া-কমা, জিনিসপত্র সরবরাহের স্বল্পতা বা চাহিদা বৃদ্ধি—যে কারণেই হোক না কেন। আমরা যদি মুদ্রাস্ফীতিকে কমাতে চাই, তাহলে আজকেই আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। আমরা তত দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারব না, একবার যদি জনগণ মনে করে যে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি থেকেই যাবে এবং জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির চক্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’
সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি নেওয়ার আগে সাধারণ মানুষের মধ্যে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা কোন জায়গায় আছে, তা জানার জন্য জরিপ করা হয়। এর নাম ‘ইনফ্লেশন এক্সপেক্টেশনস’। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ রকম কোনো জরিপই নেই।
মুদ্রানীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের নানা দাবি ও রাজনৈতিক তদবির। তাঁরা মোটেই চান না সুদহার বাড়ুক। এ নিয়েও কথা বলেছেন রঘুরাম রাজন। তিনি লিখেছেন, ‘যদি শিল্পোদ্যোগীরা চান কম সুদে ঋণ পেতে, সে ক্ষেত্রে ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা যাতে উন্নততর হয়, সেসব প্রচেষ্টাকে তাঁদের সাহায্য করতে হবে, যাতে ব্যাংক ও বন্ড বাজার স্বচ্ছন্দ বোধ করতে পারে।’ অর্থাৎ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দিতে হবে। অথচ এখানে প্রবণতা হচ্ছে সুদহার রাখা, যাতে সস্তায় ঋণ পাওয়া যায়। সস্তার ঋণ পাচারই হয় বেশি।
রঘুরাম রাজন সুদহার নিয়ে আরও লিখেছেন, ‘শিল্পোদ্যোগীরা সুদের হার বেশি বলে অনুযোগ করে থাকেন। অন্যদিকে অবসরপ্রাপ্ত মানুষেরা অভিযোগ করেন, তাঁরা তাঁদের সঞ্চিত আমানতের ওপর এখন কম সুদ পাচ্ছেন। দুই পক্ষই বাড়িয়ে বলে থাকে, যদিও আমি বারবার বলে এসেছি যে এর সমাধান একমাত্র করা যায় ভোগ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার ক্রমাগত কমিয়ে।
মুদ্রাস্ফীতির বিষয়টি এমন, যখন প্রায় প্রতি মিনিটে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে, টাকা তখন হচ্ছে একটি গরম আলুর মতো, যা কেউ হাতে ধরে রাখতে চাইবে না। মানুষ চাইবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দোকানে গিয়ে জিনিস কিনতে, যাতে রাস্তায় থাকতে থাকতেই টাকার দাম না কমে যায়। প্রবল মুদ্রাস্ফীতি আবার বণ্টনব্যবস্থার ওপরও প্রভাব ফেলে। ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বন্ড বা স্থায়ী আমানত বাবদ যা সঞ্চয় করে, তা প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।’
রঘুরাম রাজনের একটি কথা দিয়েই শেষ করা যায়। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কাজকর্মের একটি বড় উৎস হলো মানুষের প্রত্যাশা। যদি জনসাধারণ মনে করেন যে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে আমরা একনিষ্ঠ এবং তাঁরা আশা করেন যে মুদ্রাস্ফীতির হার কমে আসবে, তাহলে অবশ্যই তা কমে যাবে।’
দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে এমনটা ভাবেন কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশ ব্যাংককেই খুঁজে বের
করতে হবে।