ব্যাংকঋণের সুদহার আরও দশমিক ৫০% বাড়ানো যাবে
ঋণের সুদের হার আরও বাড়াতে পারবে ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো এখন আগের তুলনায় গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা দিয়েছে। গতকাল বুধবার নীতি সুদহার বাড়ানোর পর বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে মার্জিন বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশের স্থলে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লি ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের স্থলে সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে।
ব্যাংকগুলোয় এখন যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটি পরিচিত স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জুলাইয়ে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে যা বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। এর সঙ্গে ৩ শতাংশ অতিরিক্ত সুদ নিতে পারত ব্যাংকগুলো। ফলে ব্যাংকঋণের সুদহার ছিল সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে ব্যাংকগুলো এখন দশমিক ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সুদ নিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তের ফলে নতুন ঋণে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণ এবং কৃষি ও পল্লি ঋণের সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। যাঁরা আগে ঋণ নিয়েছেন, তাঁদের সুদহার ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না। ছয় মাস শেষ হলেই তাঁদের ক্ষেত্রে নতুন সুদ কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বর্তমান বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি পর্যায়ক্রমে হ্রাস করার লক্ষ্যে নতুন সুদহার প্রযোজ্য হবে।
এর আগে গতকাল নীতি সুদহার বা রেপো রেট দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে নতুন নীতি সুদহার বা রেপো রেট হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
সুদের হার বাড়ানোর মূল্য লক্ষ্য হলো দেশে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার কমিয়ে আনা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাইছে। গত সেপ্টেম্বরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।