ব্যাংক একীভূতকরণের নীতিমালা মানা হচ্ছে না
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্তে পুরো খাতেই আতঙ্ক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বলছে, আপাতত আর ব্যাংক একীভূত হবে না।
বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ৯ এপ্রিল হঠাৎ ডেকে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ইউসিবির চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান দেশে না থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যান ব্যাংকটির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও এমডি আরিফ কাদরী। সেখানে তাঁদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সমস্যায় থাকা ন্যাশনাল ব্যাংককে ইউসিবির সঙ্গে একীভূত করতে হবে। এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার কোনো সুযোগই পাননি ইউসিবি নেতৃত্ব।
অনেকটা একই প্রক্রিয়ায় সরকারি-বেসরকারি মোট পাঁচটি ব্যাংককে অন্য পাঁচটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কার্যত কিছুটা সবল ব্যাংকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্বল ব্যাংকের বোঝা। ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে পথনকশা দেওয়ার পর এই ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ মাসের শুরুর দিকে ব্যাংক একীভূত–সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করেছে, তবে সেই নীতিমালা প্রকাশের আগেই তিনটি ব্যাংক ও পরে দুটি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। নীতিমালা অনুযায়ী এই পর্যায়ে ব্যাংক একীভূত হওয়ার কথা স্বেচ্ছায়; কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই এই নীতিমালা মানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
যেসব ব্যাংক একীভূত হবে বলে সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে, সেসব ব্যাংকের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলে প্রথম আলো জানতে পেরেছে যে কোন ব্যাংকের সঙ্গে কোন ব্যাংক একীভূত হবে, এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব সভায় কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যাংকের ব্যক্তিরা, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু একটি ব্যাংকের পক্ষের ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে, এই একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত হচ্ছে স্বেচ্ছায় বা ঐচ্ছিক ভিত্তিতে, অর্থাৎ ব্যাংকগুলো নিজেরাই একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তত দুটি ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য কিংবা ঊর্ধ্বতন নির্বাহীরা নিজেরাও জানতেন না যে তাঁদের ব্যাংক অন্য দুটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চলেছে। অথচ নীতিমালায় আছে, একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
যেভাবে ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলছে, তা নিয়ে ব্যাংক খাতে ইতিমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্বল সূচকের অধিকারী ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি কিছুটা ভালো তালিকায় থাকা ব্যাংকগুলোও অস্বস্তিতে পড়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কখন কাকে ডেকে কোনো দুর্বল ব্যাংকের দায়িত্ব নিতে বলা হবে, তা আগে থেকে জানানো হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন এক সিদ্ধান্তে জানিয়েছে, আপাতত স্বেচ্ছায় নতুন করে আর কোনো ব্যাংক একীভূত হবে না। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, তীব্র তারল্যসংকট ও সুশাসন–ঘাটতিতে থাকা কিছু ব্যাংক একীভূত করার এই প্রক্রিয়ার বাইরে রয়ে গেছে। বিশেষ ব্যবস্থায় এসব ব্যাংকের লেনদেন চালু রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ বা বাংলাদেশ উন্নয়ন হালনাগাদ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা দরকার। সম্পদের মান ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে ব্যাংক একীভূত করা উচিত। ব্যাংক খাত সংস্কারে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে বলে জানায় সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, শুধু একীভূত করে ব্যাংক খাতকে ভালো করা সম্ভব নয়। ঋণখেলাপি, দুর্নীতিবাজ ও অনিয়মে যুক্ত পরিচালক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। জোর করে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে খারাপ ব্যাংক একীভূত করে দিলে ভালো ব্যাংকও খারাপ হয়ে যেতে পারে। এটা সংক্রামক ব্যাধির মতো পুরো ব্যাংক খাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ব্যাংকের আমানতের টাকা শুধু ভালো গ্রাহকদের দিতে হবে। যারা খেলাপি হয়েছে, কিন্তু ঋণের সুযোগ পাচ্ছে, তাদের আর টাকা দেওয়া ঠিক হবে না। এতে ব্যাংক খাত আরও খারাপ হয়ে পড়বে। একীভূত করতে হলে আন্তর্জাতিক রীতি মেনেই তা করা উচিত।
আর্থিক জগতে ব্যাংক একীভূত হওয়া বা এক ব্যাংক আরেক ব্যাংককে অধিগ্রহণ করা খুবই সাধারণ বিষয়। পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়টিকে মূলত একটি বন্ধুত্বপূর্ণ বেচাকেনা হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। দুটি ব্যাংকই চায় তাদের সম্পদ একসঙ্গে করে আরও ভালো ব্যবসা করতে। পুঁজি বাড়ানো, খরচ কমানো, নতুন বাজারে প্রবেশ করা, আরও গ্রাহক অর্জন করা, প্রযুক্তি ও পণ্যের ঘাটতি দূর করা, ব্যবস্থাপনায় নতুনত্ব আনা—এমন অনেক বিবেচনায় ব্যাংক একীভূত হয়।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, যথাযথ নিরীক্ষা না করে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার সিদ্ধান্তটি ঠিক হয়নি। সবকিছুই হয়েছে ঘোলা পানিতে। ফলে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এতে কেউ কেউ সুযোগ নিয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিতে পড়বেন। এখন যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শেষ হলে দেশের জন্য ভালো হয়।
তবে একীভূত হওয়া দুর্বল ব্যাংকের খারাপ সম্পদের দায় কীভাবে শোধ হবে, সেই বড় প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে বলে মনে করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু নীতি ছাড় দিয়ে এই ডুবন্ত তরি উদ্ধার করতে পারবে না। সরকারকে তারল্য জোগান দিতে হবে। এ ছাড়া তারল্যসংকট ও সুশাসনের ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোর দিকেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দ্রুত নজর দিতে হবে।
কী আছে একীভূত হওয়ার নীতিমালায়
বাংলাদেশ ব্যাংক ৪ এপ্রিল ব্যাংক একীভূত হওয়া সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, কোনো ব্যাংক স্বেচ্ছায় একীভূত হতে চাইলে নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদে সিদ্ধান্ত নেবে। একীভূত হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তিন বছর পর্যন্ত পৃথক আর্থিক বিবরণী প্রণয়ন করতে পারবে। এতে অধিগ্রহণকারী ব্যাংকের আর্থিক বিবরণীতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। তবে তিন বছর পর অবশ্যই একীভূত হওয়া দুই ব্যাংকের সমন্বিত আর্থিক বিবরণী প্রণয়ন শুরু করতে হবে।
পাশাপাশি ‘বাধ্যতামূলক একত্রীকরণ–সম্পর্কিত নীতিমালা’য় বলা হয়েছে, দুর্বল ব্যাংককে ২০২৫ সাল থেকে বাধ্যতামূলক একীভূত করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ব্যাংক একীভূত হওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে। এ কাজের খরচ জোগান দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের দায় ও সম্পদ গ্রহণের দরপত্র পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করতে হবে, যাতে ওই ব্যাংকের সব ধরনের তথ্য থাকবে। এতে সাড়া না মিললে যেকোনো ব্যাংকের সঙ্গে ওই ব্যাংককে একীভূত করে দিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বেশি, এটা নিয়ে অনেক দিন ধরে কথা হচ্ছে। ব্যাংক কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকও কাজ শুরু করেছে, এটা ভালো দিক। এখন দেখার বিষয় কতটা পেশাদারত্বের ভিত্তিতে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে এই ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে। সেটি না হলে মূল লক্ষ্য অর্জিত হবে না।
একীভূত করার সিদ্ধান্ত যেভাবে আসছে
গত ৩১ জানুয়ারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে এক আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দুর্বল হিসেবে বিবেচিত ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। এ জন্য ভালো ও দুর্বল ব্যাংকের এমডিদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করারও পরামর্শ দেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয় ৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকেও। ওই বৈঠকে গভর্নর জানান, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংককে ডেকে সমস্যায় জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এক্সিম ব্যাংক দুর্বল হিসেবে পরিচিত পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আগ্রহ দেখালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে রাজি হয়। এরপর ১৪ মার্চ ইসলামি ধারার এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আলাদা বৈঠক করে একে অপরের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। পরে গভর্নরের উপস্থিতিতে দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
৩ এপ্রিল সরকারি খাতের দুটি ব্যাংককে অন্য দুটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। জানানো হয়, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) এবং সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে মিলবে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)। এরপর ৮ এপ্রিল বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি খাতের সমস্যাগ্রস্ত বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। আর সর্বশেষ ৯ এপ্রিল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবির সঙ্গে সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত আসে।
সব মিলিয়ে পাঁচটি আলাদা বৈঠকে ব্যাংক একীভূত করার এসব সিদ্ধান্ত হয় এবং সব কটি বৈঠকই হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। এসব বৈঠকে বেসিক ও ন্যাশনাল ব্যাংক ছাড়া সব কটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন। তবে বেসিক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের শীর্ষ নেতৃত্ব জানতেনও না যে তাঁদের ব্যাংক একীভূত হচ্ছে।
এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ব্যাংকগুলোর পর্ষদে এই একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের অনুমোদন হবে। অথচ নীতিমালায় আছে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে আগে সিদ্ধান্ত নেবে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে কোনো পরামর্শ বা সিদ্ধান্ত পাইনি। যদি হয়ে থাকে, তবে এটা ভালো সিদ্ধান্ত।’
একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে ডেকে পাঠানোর সময় বৈঠকের বিষয়বস্তুও জানানো হয়নি। শুধু সভায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে হবে। এটা একীভূত না অধিগ্রহণ হবে, সেই পরামর্শ করারও সুযোগ দেওয়া হয়নি। ব্যাংকের আর্থিক সূচক ভালো রাখা এই দেশে এখন অপরাধের পর্যায়ে চলে গেছে। সারা পৃথিবীতে এভাবে ব্যাংক একীভূত করার ঘটনা জানা নেই।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছেন গভর্নর ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাছের। অন্য কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে জানতেও পারছেন না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংক পুনর্গঠন নানাভাবে হতে পারে। একীভূত করা তার একটি। আমাদের কাছে ব্যাংকগুলো এসেছিল, আমরা তাদের কথা শুনেছি। এটা ঐচ্ছিক একীভূতকরণের মধ্যে পড়বে। ব্যাংক বাধ্যতামূলক একীভূত করা শুরু হবে আগামী বছর থেকে। এই পাঁচ ব্যাংকের বাইরে এখনই নতুন করে কোনো ব্যাংকের ঐচ্ছিক একীভূতকরণ করা হবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি মনে করেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত না করে ও দোষী পরিচালক ও কর্মকর্তাদের শাস্তি না দিয়ে ব্যাংক একীভূত করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ব্যাংক একীভূত করতে হবে আন্তর্জাতিক রীতি মেনে। একদিকে কিছু দুর্বল ব্যাংক টিকিয়ে রাখতে ও অন্যদিকে কিছু ব্যাংক একীভূত করতে উদ্গ্রীব কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই দ্বিমুখী নীতি থেকে এখন সরে আসা উচিত।