রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছে ব্যাংকের পাওনা অর্ধলক্ষ কোটি টাকা

জাতীয় সংসদ ভবনফাইল ছবি

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দেশের সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পাওনা প্রায় ৫১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। আজ সোমবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এই তথ্য জানিয়েছেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে এ তথ্য উত্থাপন করা হয়।

সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের এক প্রশ্নের জবাবে ৫৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা টাকার তথ্য তুলে ধরেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি পাওনা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে। সংস্থাটির কাছে ব্যাংকের পাওনা প্রায় ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সরকারি চিনিকলগুলোর কাছে ব্যাংকের পাওনা ৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা। সার, রাসায়নিক ও ওষুধশিল্প সংস্থাগুলোর কাছে পাওনা ৭ হাজার ২৫১ কোটি টাকা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির কাছে পাওনা ৫ হাজার ১৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ বিমান করপোরেশনের কাছে পাওনা ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ দেশের ১৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বকেয়া পাওনা রয়েছে।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন এক প্রশ্নে দেশের শীর্ষ ৩০ ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চান। জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংসদকে জানান, শীর্ষ ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চিহ্নিত করা এবং এসব ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ বিভিন্ন নিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান আইনে খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা–সম্পর্কিত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনাও জারি করেছে। এর বাইরে ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে বিতরণ করা ঋণের অর্থ নির্দিষ্ট খাতের বদলে যাতে অন্য খাতে ব্যবহৃত না হয়, তা নিয়মিত তদারকির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংসদকে জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাব মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, চলতি বছরের মে পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪১৬ কোটি মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব বিপিএম ৬ অনুযায়ী, মে মাস শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৬৩ কোটি ডলার।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য মইনুল হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, বর্তমানে দেশে কর প্রদানকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে মে ২০২৪ পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করেছেন ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৭০৬ জন।