জিএম ও ডিএমডি পদে পদোন্নতি ও পদায়নের নীতিমালা সংশোধনের দাবি তিন ব্যাংকের
সরকারি ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে পদোন্নতি ও পদায়ন নীতিমালা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন সোনালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, নিজ নিজ ব্যাংকের পদায়নের সুযোগ বাতিল করায় রূপালী ব্যাংকের জুনিয়র কর্মকর্তারা তাঁদের ব্যাংকে এসে তুলনামূলক বড় পদে বসছেন। এতে কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। সে জন্য তাঁরা আগের মতো শুধু নিজ ব্যাংকের পদের বিপরীতে পদোন্নতি ও পদায়ন চেয়েছেন।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা সম্প্রতি অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে দেওয়া এক চিঠিতে এ দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের পক্ষে ব্যাংক তিনটির ডিজিএম ও জিএম পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা এতে সই করেন।
চিঠিতে বলা হয়, সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংক শতভাগ শেয়ার সরকারের হাতে ন্যস্ত রেখে ২০০৭ সালে বাংকগুলোকে লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ডিএমডি ও জিএম পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন নিজ নিজ ব্যাংকেই ন্যস্ত করে। কেবল ডিএমডি পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলির কার্যক্রম মন্ত্রণালয়ের হাতে ছেড়ে দেয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে জিএম পদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়। এর আগে ২০১৯ সালেও তারা একই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাতিল করে।
সোনালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির আওতায় ১৯৯৮ সালে একটি বৃহৎ ব্যাচ রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকে চাকরি শুরু করে। যোগদানের সময় মেধাভিত্তিক প্রার্থীর যথাক্রমে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু একই সময়ে যোগদান করা সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের একজনও জিএম বা মহাব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতির সুযোগ পাননি। অন্যদিকে রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দেওয়া হয়। ফলে রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারাই অন্য ব্যাংকগুলোতে জিএম, ডিএমডি ও এমডি পদে বসার সুযোগ পেয়েছেন। এতে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী এই তিন ব্যাংকে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য পদোন্নতি ও পদায়ন নীতিমালা সংশোধন ও আগের নীতিমালা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, শুধু একটি ব্যাংককে সুবিধা দেওয়ার জন্য জারি করা নীতিমালার ফলে অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মেধা, অভিজ্ঞতা ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘিত হয়েছে। রূপালী ছাড়া অন্যান্যা ব্যাংকের অভিজ্ঞ ব্যাংকারদের পদোন্নতির স্বপ্ন পদদলিত হয়েছে এবং সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তারা।