পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেওয়ায় কতটা কাজ হবে বলতে পারছি না
ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় লাভ করেন, আবার লোকসানও করেন। এটা মেনে নিয়ে তাঁদের ব্যবসা করতে দেওয়া উচিত। তবে অতিরিক্ত মুনাফা করা কখনোই ঠিক না। এ ক্ষেত্রে সরকার দেশি পেঁয়াজের দাম কমাতে যে সদিচ্ছা দেখাচ্ছে তা ইতিবাচক; কিন্তু পেঁয়াজের মতো কাঁচামালের দাম নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়ায় কতটা কাজ হবে তা বলতে পারছি না।
সরকার দেশি পেঁয়াজের দাম খুচরা পর্যায়ে কেজি ৬৪–৬৫ টাকায় বেঁধে দিয়েছে। যতটুকু জেনেছি, পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেওয়ার আগে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। ফলে এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। দেশি পেঁয়াজের দাম কমাতে গিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজের দামেও লোকসান দিতে হচ্ছে। এমনটা হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আমদানি কমিয়ে দিতে পারেন।
আমদানি খরচসহ বিদেশি পেঁয়াজের পাইকারি দাম হয় প্রতি কেজি ৬৫–৮০ টাকা; কিন্তু দাম নির্ধারণের পর গত দুই দিনে পাইকারিতে ঢাকার শ্যামবাজারে ৬০–৬৫ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ লোকসান দিয়ে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন। অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তারা এসে ৫৪–৫৫ টাকায় ওই পেঁয়াজ বেচাকেনা করতে বলছেন। এতে লোকসান আরও বাড়বে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের অতিরিক্ত মূল্য রাখলে সেটিও ঠিক না। এ জন্য সরকার তদারকি বাড়াতে পারে। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজের কিছু অংশ গৃহস্থ ও বাকি অংশ বিভিন্ন মোকামে মজুতদারদের কাছে রয়েছে। ব্যাপারীরা তাঁদের থেকে কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ পাঠান। পাঁচ–ছয় দিন আগে যে দামে ব্যাপারীরা মোকাম থেকে পেঁয়াজ কিনেছিলেন, এখন তার চেয়ে কম দামে তাঁদের পাইকারি বাজারে তা বিক্রি করতে হচ্ছে।
দাম বেঁধে দেওয়ার পর গত দুই দিনে সরকারি কর্মকর্তারা বিভিন্ন মোকামে গিয়ে দাম কমানোর জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। এ কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মুনাফা কমার আশঙ্কা করছেন। ফলে গত তিন দিনে মোকামগুলোতে বেচাকেনা কমে গেছে।
সরকার কম দামে জনগণের কাছে নিত্যপণ্য দিতে চাইবে। এ জন্য এখন দাম বেঁধে দিয়েছে; কিন্তু গত বছরও যখন কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে, তখন তো সরকার ব্যবসায়ীদের কোনো সহায়তা বা ভর্তুকি দেয়নি। এদিকটাও সরকারকে ভাবতে হবে।
মো. আবদুল মাজেদ, সাধারণ সম্পাদক, শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতি