শেয়ারবাজার স্বাভাবিক হবে, এটাই প্রত্যাশা

মো. তরিকুল ইসলাম

গত দেড়-দুই বছর শেয়ারবাজারে বলতে গেলে তেমন কোনো কার্যক্রমই ছিল না। ফ্লোর প্রাইসের কারণে এ সময় ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোরই লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা যারা ভালো কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ করেছি, তারা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বাজারে কোনো লেনদেন করতে পারছি না।

ভালো শেয়ারে যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের লেনদেনের কোনো অবস্থা বাজারে নেই। পুরোনো বিনিয়োগই আটকে আছে, সেখানে নতুন করে আর বিনিয়োগ করার কোনো আগ্রহই দেখা যাচ্ছে না শেয়ারবাজারে। নতুন বছরে শেয়ারবাজার এ স্থবিরতা কাটিয়ে স্বাভাবিক গতিতে ফিরবে, এটাই আমার মতো বিনিয়োগকারীদের প্রধান চাওয়া।

আমরা দেখছি, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেরই শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এসব বাজার অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অথচ আমাদের বাজারে দুই বছরে কোনো প্রবৃদ্ধিই নেই। দেশের সামগ্রিক যে উন্নয়ন, তার কোনো প্রতিফলন বর্তমান শেয়ারবাজারে নেই। তাহলে এ বাজারে কারা এবং কেন বিনিয়োগ করবেন, এটিই এখন বড় প্রশ্ন। আমার নিজের ও আমার প্রতিষ্ঠানের নামে বাজারে যে বিনিয়োগ রয়েছে, সেখান থেকে এক বছরে কোনো মুনাফা মেলেনি। বরং যাঁরা ঋণ করে বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা বলতে গেলে কোনো লেনদেন না করেই মূলধন হারিয়েছেন।

ফ্লোর প্রাইসের কারণে বাজার স্থবির হয়ে আছে, এ কথা ঠিক। তবে এটাও ঠিক যে হুট করে এ ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলে তাতে বাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই আগাম প্রস্তুতি নিয়েই ফ্লোর প্রাইস তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আগে সরকারি তহবিল সহায়তার মাধ্যমে বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় নিতে হবে। তাতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও আস্থা ফিরবে।

এভাবে একটি পর্যায়ে যাওয়ার পর ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলে তাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। তাই ফ্লোর প্রাইস তোলার আগে সরকারি বিনিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার। সে জন্য এখন থেকেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে কাজ করতে হবে।

  • মো. তরিকুল ইসলাম, শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারী