বিশ্ববাজারের জন্য আইফোন তৈরি করবে ভারতের টাটা

আইফোন

ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী টাটা এবার বিশ্ববাজারের জন্য আইফোন তৈরি করবে। স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা, ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধ এবং চীনের বাইরে অ্যাপলের আইফোন উৎপাদনের কৌশল নেওয়ার কারণে টাটা সুযোগটি পেয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, টাটা গ্রুপ আড়াই বছরের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক বাজারের জন্য অ্যাপলের আইফোন উৎপাদন শুরু করবে। ভারতের কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিকস ও প্রযুক্তিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর আজ শুক্রবার টাটার আইফোন তৈরির এই ঘোষণা দেন। এতে ভারতের উৎপাদন খাতের ক্রমাগত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রমাণ মেলে। সেই সঙ্গে চীনের বাজার ছেড়ে অ্যাপলের আইফোন উৎপাদনের বৈচিত্র্য আনার কৌশলও বাস্তবায়িত হবে। ফলে সারা বিশ্বের আগ্রহী গ্রাহকেরা ভারতে তৈরি আইফোন পাবেন। এত দিন বেশির ভাগ আইফোনই তৈরি হতো চীনে, যা পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন বৈশ্বিক গ্রাহকেরা।

ভারতের কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিকস ও প্রযুক্তিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় বলেন, বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস ব্র্যান্ডগুলো ভারতকে তাদের পণ্য উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে দেখতে চায়। আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও লক্ষ্য হচ্ছে, ভারতকে বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস শক্তি হিসেবে গড়ে তোলা।

এদিকে নতুন উদ্যোগের অংশ হিসেবে ভারতের ১৫৫ বছরের পুরোনো শিল্পগোষ্ঠী টাটা অ্যাপলের পণ্য সরবরাহকারী উইস্ট্রোন করপোরেশনের ভারতের পরিচালন কার্যক্রম অধিগ্রহণ করেছে। এ জন্য তারা উইস্ট্রোন করপোরেশনকে ১২৫ মিলিয়ন বা ১২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার দেবে। আজ উইস্ট্রোন করপোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের সভার পর এক বিবৃতিতে পরিচালন কার্যক্রম বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়। তাদের কারখানাটি ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে অবস্থিত।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উইস্ট্রোনকে ভারত থেকে স্থানীয় কোম্পানিগুলো সঙ্গে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ধন্যবাদ জানান।

অ্যাপলের আইফোন ব্র্যান্ডের পণ্য ভারতে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। এগুলো হলো প্রথমত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্থানীয় উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করতে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয়ত, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। তৃতীয়ত, অ্যাপলের আগ্রহ চীনের বাইরে তাদের পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনা বা বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র পাওয়া। এ জন্য তারা মোদির প্রণোদনা প্রদান ও চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের সুযোগ কাজে লাগানোর কৌশল নেয়।