বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত

বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের পণ্য যাওয়ার ব্যবস্থা প্রত্যাহার করেছে ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গতকাল বুধবার এ সুবিধা বাতিল করে আদেশ জারি করেছে। সিবিআইসির ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

২০২০ সালের ২৯ জুন এ–সংক্রান্ত এক আদেশে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল সিবিআইসি। এখন সে সুবিধা প্রত্যাহার করল ভারত।

বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ করে আজ বুধবার একটি বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছে, একটি বড় সময় ধরে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার কারণে ভারতের বিমানবন্দর ও বন্দরগুলোতে উল্লেখযোগ্য জট দেখা দিয়েছে। পরিবহন সরঞ্জাম ও অন্যান্য সেবা (লজিস্টিক্যাল) সুবিধায় বিলম্ব এবং উচ্চ ব্যয়ের কারণে ভারতের নিজেদের রপ্তানি বিঘ্নিত হচ্ছে এবং পণ্যের জট (ব্যাকলগ) তৈরি করছে। সে কারণে এ সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা ৮ এপ্রিল ২০২৫ থেকে কার্যকর।

বিবৃতিতে ভারত দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপে ভারতের সীমান্ত দিয়ে পরিবহন করে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে না।

ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর আজ রাতে জরুরি বৈঠকে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে ব্যবসায়ীদের নিয়ে কারওয়ান বাজারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কার্যালয়ে এ বৈঠক বসে। রাত ১০টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই বৈঠক চলছিল। বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলন শেষে ৪ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই নেতা দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়েও কথা বলেন। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যখন দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের পথ খোঁজা হচ্ছে, তখন সিদ্ধান্তটি হতবাক করেছে। এ বিষয়ে বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া উচিত। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।’