রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা চলবে
বাংলাদেশের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন বা আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের আদালতে মামলা চলবে। আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় যে মামলা করা হয়েছিল, সেই মামলা থেকে দুটি প্রতিষ্ঠানকে (ক্যাসিনো) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এ মামলায় আরসিবিসিসহ ১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের মধ্য থেকে ব্লুমবেরি ও ইস্টার্ন হাওয়াই নামে দুটি ক্যাসিনো প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দিয়েছে নিউইয়র্ক কাউন্টি সুপ্রিম কোর্ট। মামলা পুরোপুরি খারিজ করা হয়নি। তাই মামলার মূল আসামি আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা চলবে।
নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট ৮ এপ্রিল এক রায়ে ‘এখতিয়ার না থাকার’ কথা উল্লেখ করে ফিলিপাইনের ব্লুমবেরি ও ইস্টার্ন হাওয়াই নামে দুটি ক্যাসিনোকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরসিবিসি, লোরেঞ্জো টান, রাউল টান ও কিম অং নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্টে আলাদা আলাদা আবেদন করেন। এর মধ্যে গত ১৪ জুলাই ব্লুমবেরি, ইস্টার্ন হাওয়াই ও কিম জংয়ের অব্যাহতির আবেদন শুনানি হয়। ওই শুনানির ভিত্তিতে ৮ এপ্রিল মামলার আংশিক রায় ঘোষণা করেন নিউইয়র্কের বিচারিক আদালত। সেই রায়ে ব্লুমবেরি ও ইস্টার্ন হাওয়াইকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও কিম জংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগের জবাব দিতে নির্দেশ দেন আদালত। বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনো রায় ঘোষণা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, মামলার মূল আসামি ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসির বিরুদ্ধে আদালত রায় দেবেন।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। যার বড় অংশই এখনো ফেরত আসেনি। এ ঘটনায় প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে মামলা করেছিল। সেই আদালত আরসিবিসির মোশন টু ডিসমিস আবেদন খারিজ করেছিলেন। সেই আদেশে বলা হয়েছিল, এই চুরি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে সংঘটিত হয়েছিল। জালিয়াতির মাধ্যমে পেমেন্ট অর্ডারসহ বিভিন্ন হিসাবে অর্থ স্থানান্তর—এ সবকিছু সন্দেহাতীতভাবে নিউইয়র্কে সংঘটিত হয়েছিল। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে নিযুক্ত আইনি প্রতিষ্ঠান আশা করছে, মামলার মূল আসামি আরসিবিসির মোশন টু ডিসমিস আবেদনের বিষয়ে নিউইয়র্কের আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ইতিবাচক রায় দেবেন।
রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৭ মে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।