মা–বাবাকে নগদে পাঁচ লাখ টাকার বেশি দিতে পারবেন সন্তানেরা
ছেলেমেয়েরা এখন থেকে তাঁদের মা-বাবাকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি দিতে চাইলে ব্যাংক চেকের পরিবর্তে নগদেও দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এত দিন শুধু মা-বাবারাই সন্তানদের পাঁচ লাখ টাকার বেশি অর্থ ব্যাংক চেকের পাশাপাশি নগদেও দিতে পারতেন। এবারের বাজেটে সন্তানদেরও মা-বাবার মতো একই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অর্থবিলের মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ ধারায় পরিবর্তন এনে সন্তানদের জন্য এমন সুযোগ প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে কোন খাতে ওই টাকা খরচ করা হয়েছে, তা কিন্তু জানাতে হবে। আবার এই টাকা আনুষ্ঠানিকভাবে লেনদেনের একটি উৎসও থাকতে হবে।
একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। ধরুন, আবদুল করিম সাহেব একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। কয়েক বছর আগে অবসরের যাওয়ার পর তিনি সারা জীবনের সঞ্চয় ও পেনশনের টাকা দিয়ে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় একটি বাড়ি করার উদ্যোগ নেন। টাকার অভাবে দোতলার বেশি পারেননি। পরে তাঁর দুই ছেলে প্রতিষ্ঠিত হন। একজন চিকিৎসক ও আরেকজন প্রকৌশলী। মোটা বেতনের চাকরি তাঁদের। তাই বাবার ওই বাড়িতে তাঁরা আরও দুটি ফ্ল্যাট করার কথা ভাবেন। কিন্তু বাড়িটি বাবার নামে থাকায় তাঁর নামেই টাকা খরচ করতে হবে। আবার টাকার অঙ্ক পাঁচ লাখ টাকার বেশি হলে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে দেওয়ার নিয়ম। এই ঝক্কিতে যেতে চাননি তাঁরা। কারণ, বাবার ব্যাংক হিসাবে অর্থ গেলেই কর অফিস নানা প্রশ্ন করতে পারে, এত টাকা কোথা থেকে এল, কে দিল ইত্যাদি। সে জন্য বাবাকে ঝামেলায় ফেলতে চাননি তাঁর দুই ছেলে।
এবারের বাজেট দুই ছেলের সামনে তাঁদের বাবাকে টাকা দেওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে।
কারণ, করিম সাহেবের দুই ছেলেই এখন তাঁকে নগদে পাঁচ লাখ টাকার বেশি দিতে পারবেন, যা খরচ করে বাবা ফ্ল্যাট বানাতে পারবেন। এ জন্য করিম সাহেবকে অবশ্য আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে যে তাঁর ছেলেরা নতুন ফ্ল্যাটগুলো তৈরি করেছেন।
এত দিন মা–বাবা সন্তানদের নামে সঞ্চয়পত্র, এফডিআর বা অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করে পাঁচ লাখ টাকার বেশি খরচ করলে ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে লেনদেন না করলেও চলত। এবার সুযোগটি উভয়মুখী করা হলো। অর্থাৎ সন্তানেরাও মা-বাবার মতো একই সুযোগ পাবেন।