গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা

নির্মাণের পরিকল্পনার পর এক যুগ পার। মাতারবাড়ীতে কাজ শুরু আগামী বছর। সোনাদিয়া বাদ আগেই। পায়রা থেকেও পিছিয়েছে সরকার।

নির্মাণের প্রক্রিয়ায় থাকা মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের একাংশ। প্রায় ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই চ্যানেলের ডান পাশে হবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল। সম্প্রতি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী এলাকায়।ছবি: প্রথম আলো

‘ভিয়েতনামের গভীর সমুদ্রবন্দর আছে। সে দেশের ব্যবসায়ীরা যত তাড়াতাড়ি পণ্য সরবরাহ করতে পারেন, আমরা তা পারি না।’

বলছিলেন দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী। তাঁর মতে, পোশাক খাতে প্রতি মিনিটের হিসাব হয়। রপ্তানি বাজারে যে যত দ্রুত পণ্য সরবরাহ করতে পারে, যে যত কম খরচে পাঠাতে পারে, সে দেশই এগিয়ে থাকে, ক্রয়াদেশ বেশি পায়।

বাংলাদেশ এত দিন সস্তা শ্রম আর বাণিজ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে ভিয়েতনামের চেয়ে এগিয়ে ছিল, পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছিল। কিন্তু ভিয়েতনাম এখন বাংলাদেশের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে। ওদিকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের গভীর সমুদ্রবন্দরের অপেক্ষা শুধু দীর্ঘ হয়েছে।

দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০০৯ সালে। শুরুতে পরিকল্পনায় ছিল কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ। এরপর আসে পটুয়াখালীর পায়রা। সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো, সোনাদিয়া বা পায়রায় নয়, কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ীতেই হবে গভীর সমুদ্রবন্দর। পায়রায় যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ অনেকটা অসম্ভব, তা সরকারের উপলব্ধিতে এসেছে।

মাতারবাড়ী নিয়ে যে পরিকল্পনা, তা ঠিকঠাকভাবে এগোলে গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও চার বছর। গত বছর মার্চে প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। সেখানে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে আগামী বছর জুলাইয়ে।

বন্দরের জন্য এই দীর্ঘ অপেক্ষার মাশুল দিতে হচ্ছে ঘাটে ঘাটে। পণ্য আমদানিতে খরচ বেশি পড়ছে। বাড়তি ব্যয় যোগ হচ্ছে পণ্যের দামে। এ ছাড়া বিনিয়োগেও পিছিয়ে থাকতে হচ্ছে। পণ্য বাণিজ্যে পরিবহন ও বন্দরসুবিধা নিয়ে ২০১৮ সালে করা বিশ্বব্যাংকের ‘লজিস্টিকস পারফরম্যান্স ইনডেক্সে’ ১৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০০তম, যা ২০১৬ সালের অবস্থানের চেয়ে ১৩ ধাপ পেছনে। এই সূচকে ভিয়েতনামের অবস্থান ৩৯তম, ভারতের ৪৪তম। অবশ্য মিয়ানমার অনেক পিছিয়ে আছে, ১৩৭তম।

১৯৭৮ সাল থেকে শুরু

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাতিষ্ঠানিক সূচনা ১৮৮৭ সালে। এই বন্দরের গভীরতা পাওয়া যায় সাড়ে ৯ মিটারের মতো। এ কারণে সেখানে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। দেশে যে বাড়তি গভীরতায় জাহাজ ভেড়ানোর টার্মিনাল দরকার, তা উপলব্ধিতে এসেছিল ১৯৭৮ সালে। চট্টগ্রাম বন্দরের পুরোনো এক প্রকাশনায় দেখা যায়, ওই বছর নেদারল্যান্ডস ইকোনমিক ইনস্টিটিউট নামের একটি সংস্থা ১১টি স্থান পরিদর্শন করে কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে গভীর পানির টার্মিনাল নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশ করেছিল। যদিও সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়িত হয়নি।

এরপর বিভিন্ন সরকারের আমলে গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে। কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০০৯ সালে। ওই বছর জাপানের প্যাসিফিক কনসালট্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল নয়টি সম্ভাব্য এলাকা পরিদর্শন করে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের সুপারিশ করে সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়। ২০১২ সালে সরকার সোনাদিয়া দ্বীপে গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প অনুমোদন দেয়। ২০১৬ সালে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার সময় ধরা হয়। অর্থায়ন করার আলোচনা চলছিল চীনের সঙ্গে। অবশ্য ২০১৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে নির্ধারিত সমঝোতা স্মারক সই হয়নি।

সোনাদিয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যেই পটুয়াখালীর পায়রায় সরকার গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ঘোষণা দেয়। তবে তখনো সমীক্ষা হয়নি। পরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ডকে দিয়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করানো হয়। এরপর ১ হাজার ৮৩৪ কোটি ডলার বা প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা) খরচ ধরে প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়। এতে এটি দাঁড়ায় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বন্দর প্রকল্প।

২০১৮ সালে পায়রায় প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ঘোষণা দেন সে সময়ের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তবে বিশেষজ্ঞরা নির্মাণ এবং নদীর পলি অপসারণে বিপুল ব্যয়ের কারণে এ প্রকল্প নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। সম্প্রতি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে না।

এদিকে জাপান নিয়ে আসে ‘বিগ বি’ ধারণা, যা হলো ‘দ্য বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট’। এ কৌশলগত পরিকল্পনায় এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বন্দর, যোগাযোগ, শিল্পাঞ্চলসহ সমন্বিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলা হয়। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ‘বিগ বি’ উদ্যোগের ঘোষণা দেন। এর বাস্তব রূপ দিতে দেশটির উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ২০১৬ সালে একটি জরিপ করে মাতারবাড়ীতে বন্দর নির্মাণের পরামর্শ দেয়। এরপর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ‘মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ নেয়, যা যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ। চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন হওয়ায় নথিপত্রে এটিকে মাতারবাড়ী টার্মিনাল বলা হচ্ছে। কার্যত এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর।

শুরুতে মাতারবাড়ীতে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা খালাসের জন্য জেটি নির্মাণের কথা বলা হয়। পরে আসে বাণিজ্যিক বন্দরের কথা। জাহাজ চলাচলের নৌপথ খননের পর গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করা হয়। প্রকল্প পরিকল্পনা বলছে, এই বন্দরের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। বন্দর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা।

প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয় গত বছরের মার্চে। প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ১২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে জাপান।

গভীর সমুদ্রবন্দর কেন দরকার

বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যে এখন সংকট চলছে। রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য জাহাজে বুকিং সহজে মিলছে না। কনটেইনার ডিপোগুলোতে রপ্তানি পণ্যের স্মরণকালের জট। ঠিক এ সময়ে যদি দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর থাকত, তাহলে সমস্যা সমাধানে বিকল্প হাতে থাকত। ইউরোপ-আমেরিকায় সরাসরি পণ্য পরিবহন সেবা থাকলে যেমন অগ্রাধিকার পেত এ দেশের রপ্তানিকারকেরা, তেমনি বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে বড় আকারের এক-দুই জাহাজেই জমে থাকা সব রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার ইউরোপ-আমেরিকায় নেওয়া যেত।

গভীর সমুদ্রবন্দরে বড় জাহাজে করে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ পণ্য পরিবহন করা যায়। তাতে পণ্য পরিবহন খরচ কমে। সময়ও কম লাগে। সব মিলিয়ে ব্যবসার খরচ কমে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে গেল বছর ১ হাজার ৩৭৮টি জাহাজে পৌনে ২৬ লাখ কনটেইনার আনা-নেওয়া হয়েছে। মাতারবাড়ীর মতো গভীর সমুদ্রবন্দর হলে ১৬১ থেকে ২০০ জাহাজে এই পরিমাণ কনটেইনার পরিবহন সম্ভব হবে। জেটিও তিন-চারটির বেশি লাগবে না।

মাতারবাড়ী নিয়ে জাইকার সমীক্ষায় বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে তুলনা করলে মাতারবাড়ী টার্মিনালে সমুদ্রপথে প্রতি ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারে খরচ সাশ্রয় হবে ১৩১ ডলার। আর ৪০ ফুট লম্বা কনটেইনারে সাশ্রয় প্রায় ১৯৭ ডলার।

উপেক্ষিত চট্টগ্রাম বন্দর

পটুয়াখালীতে পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর করতে গিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টিও জোর পায়নি। এই বন্দরে সর্বশেষ ২০০৭ সালে পাঁচ জেটির নিউমুরিং টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। এদিকে বাণিজ্যের চাপ বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায়ই জট তৈরি হয়। জটের শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালের জুন মাসে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা ‘আঙ্কটাডের’ বন্দর সূচক বলছে, ‘বার্থ অকোপেন্সি’ বা জেটির ব্যবহার ৭০ শতাংশ হলে বন্দরে জট শুরু হয়। সেবার মান কমতে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০১৫ সালেই জেটি ব্যবহারের হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। মাঝেমধ্যে তা ৯৯ শতাংশেও উঠে যায়। ফলে ভুগতে হয় ব্যবসায়ীদের।

এত চাপ থাকার পরও জেটি হয়নি। প্রায় ১৪ বছর পর এ বছর শেষে তিন জেটির একটি টার্মিনাল চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রামের সিকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক মনে করেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে কয়েকটি সুবিধা বিনিয়োগকারীরা প্রথমেই জানতে চান, তার অন্যতম হলো বন্দর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্দরসুবিধা তৈরিতে আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে।’

মাতারবাড়ীতে কাজ চলছে

মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের নকশা জমা দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এটি চূড়ান্ত হওয়ার পর দরপত্র প্রণয়ন ও আহ্বান শেষে ঠিকাদার নির্বাচন করতে হবে। এরপর আগামী বছরের জুলাইয়ে জেটির নির্মাণকাজ শুরুর কথা। বহুমুখী পণ্য ওঠানো-নামানোর প্রথম জেটি নির্মাণ শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনে। কনটেইনার জেটি তৈরি শেষ হওয়ার সম্ভাব্য সময় একই বছর ডিসেম্বরে।

সম্প্রতি কর্ণফুলী নদী থেকে সাগরপথে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে মাতারবাড়ীতে গিয়ে দেখা মেলে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নৌপথের। সাগর থেকে উপকূল পর্যন্ত পাথর দিয়ে তৈরি করা বাঁধের মতো স্রোত প্রতিরোধক থাকায় নৌপথে ঢেউ নেই। তাতে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোয় কোনো সমস্যা হবে না। গভীর সাগরের নীল পানি দেখা গেল নৌপথে। এটি দেশের কোনো বন্দরেই নেই। নীল পানি থাকায় নৌপথের বড় অংশে পলিও বেশি জমবে না বলে মনে করেন বন্দর কর্মকর্তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, এই নৌপথে ঢোকার ডান পাশে, যেখানে বন্দর নির্মিত হবে, সেখানে এখন কোনো স্থাপনা নেই। লাল কাপড় টাঙানো ছোট্ট খুঁটি দেখা গেল। আছে ছোট একটি টাওয়ার। নৌপথের এই পাশে একটি ৩০০ মিটার এবং আরেকটি ৪৬০ মিটার জেটি নির্মিত হবে। এই দুটি জেটি নিয়েই হচ্ছে প্রথম টার্মিনাল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঠিক সময়ে টার্মিনাল নির্মিত হলেও পণ্য পরিবহনের পুরোপুরি সুফল পেতে এক থেকে দেড় বছর অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, টার্মিনাল থেকে সড়কপথে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য প্রায় ২৮ কিলোমিটার সড়ক প্রস্তুত হবে বন্দরের প্রথম জেটি নির্মাণের দেড় বছর পর।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নরম কাদামাটিতে প্রায় সাত মিটার উঁচু করে সড়ক নির্মাণে জটিল কাজ। বর্তমানে সড়ক নির্মাণের নকশা প্রণয়ন ও জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চলছে।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, সড়কপথ যুক্ত হওয়ার আগে মাতারবাড়ী টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হবে। এ জন্য শুরুতে নৌপথে মাতারবাড়ী টার্মিনাল থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহন শুরুর পরিকল্পনা আছে।

‘সুযোগ হাতছাড়া’, তবে..

গভীর সমুদ্রবন্দর হলে প্রতিবেশী দেশকে ট্রান্সশিপমেন্টের (পণ্য পরিবহন) সুযোগ দিয়ে আয় করা যাবে। আবার পণ্য পরিবহনের আঞ্চলিক কেন্দ্র বা হাব হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগও রয়েছে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোনাদিয়া বন্দর যদি যথাসময়ে নির্মিত হতো, তাহলে নিজেদের পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি মিয়ানমার, চীনের ইউনান, ভারতের সাত রাজ্যসহ আশপাশের দেশের পণ্যও পরিবহন করা যেত। আমরা দেরি করায় চীন মিয়ানমারে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে। তাতে সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, এরপরও সোনাদিয়ার ভালো বিকল্প হলো মাতারবাড়ী। আঞ্চলিক বন্দর হিসেবে মাতারবাড়ীর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নইলে বন্দরটির সক্ষমতার পুরোপুরি ব্যবহার হবে না।