২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুতে সম্মতি মিয়ানমারের
বছরখানেক আগে একবার ব্যর্থ হওয়ার পর কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের জন্য আগামী সপ্তাহে নতুন করে চেষ্টা শুরু করছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিন্ত থু টেলিফোনে বলেন, ‘আমরা ৩ হাজার ৫৪০ জনকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে একমত হয়েছি। ২২ আগস্ট তাদের ফেরত নেওয়া হবে।’
দুই দেশের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পাঠানো ২২ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা থেকে ৩ হাজার ৫৪০ জনকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর নতুন এই প্রচেষ্টা ‘ছোট আকারের’ প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার অংশ। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন ছাড়া বাংলাদেশ কিছুই চায় না। কাউকেই জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে না।
তবে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের কর্মী মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কোনো পক্ষ থেকেই আলোচনা করা হয়নি। প্রত্যাবাসন শুরুর আগে মিয়ানমারের উচিত রোহিঙ্গাদের মূল দাবিগুলো মেনে নেওয়া।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে (ইউএনএইচসিআর) পাঠানো কিছু ই-মেইলের কপি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে এসেছে। ওই বার্তাগুলোতে প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত তালিকায় থাকা রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে চায় কি না, তা যাচাই করতে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একটি ই-মেইলে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের যথাসম্ভব প্রাসঙ্গিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করবে ইউএনএইচসিআর।
এ নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনএইচসিআরের এক মুখপাত্র মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি নিরাপত্তাচৌকিতে হামলার জেরে সেখানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গা গ্রামগুলোয় গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করেছে। তবে মিয়ানমারের সরকার ও সেনাবাহিনী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।