শ্বশুরকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন জামাতা

জিয়াউল হক মৃধা
জিয়াউল হক মৃধা

শ্বশুরকে সমর্থন জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টি প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা। শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সরাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রেজাউলের শ্বশুর স্বতন্ত্রপ্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের বর্তমান সাংসদ কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা। তিনি ২০০৮ সালেও এই আসনে সাংসদ ছিলেন। তবে এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে রেজাউল ইসলাম ভূঞা মনোনয়ন পাওয়ার পর জামাই-শ্বশুরের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগে। এই ঘটনায় শ্বশুর জিয়াউল হক স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন জাপার বর্তমান মহাসচিব জিয়াউলকে মহাজোট প্রার্থী দাবি করে লাঙল প্রতীক বরাদ্দের জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেজাউলকে লাঙল ও জিয়াউলকে সিংহ প্রতীক বরাদ্দ দেন। লাঙ্গল প্রতীকের জন্য জিয়াউল উচ্চ আদালতে রিট আবেদনও করেন। কিন্তু উচ্চ আদালত তাঁর রিট আবেদন খারিজ করে দেন। সম্প্রতি মহাজোট প্রার্থী হিসেবে শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত পোস্টার সাঁটানোর কারণে জিয়াউলের এক সমর্থককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। শুক্রবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে মনোনয়ন নিয়ে জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটল।

সংবাদ সম্মেলনে রেজাউল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘সরাইল-আশুগঞ্জে জামাই-শ্বশুরের মধ্যে একটা অপশক্তি কাজ করেছে। সেই অপশক্তি রোধ করতেই নিজে সরে দাঁড়িয়ে শ্বশুরকে সমর্থন জানিয়েছি। নির্বাচন ঘিরে সরাইল-আশুগঞ্জের ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আগ্রহ ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমাকে এ আসনে মহাজোটের পক্ষ থেকে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এতে আমি এই আসনের মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি।’

একই সংবাদ সম্মেলনে সিংহ প্রতীকের প্রার্থী শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি পানি কাটলে দুই ভাগ হয় না, রক্ত কাটলেও দুই ভাগ হয় না। তাই পারিবারিকভাবে আমরা মিলিত হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এ আসনে গভীর ষড়যন্ত্র ও নানা ধরনের ভানুমতির খেলা চলেছে। সেই ভানুমতির খেলার অবসান প্রয়োজন। তাই ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং শান্তি-শৃঙ্খলার বজায় রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। রেজাউল এটা ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছে।’ এ জন্য জামাতা রেজাউলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান জিয়াউল।

কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন, সরাইল উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব হুমায়ূন কবির প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।