বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আজ শনিবার সমঝোতা বৈঠক করেছেন রাজনৈতিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বৈঠকে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছেছ।
আজ সকাল ১০টায় সার্কিট হাউস মিলনায়তনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। বিকেল পৌনে চারটায় তা শেষ হয়। বৈঠকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস, নগর পুলিশ কমিশনার মো. মোশারফ হোসেন, জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান, শিক্ষাবিদ মো. হানিফ, প্রবীণ আইনজীবী এস এম ইকবাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হাসিনুর রহমানসহ বেশ কয়েক শিক্ষক এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। তবে বৈঠক চলাকালে সার্কিট হাউসের সামনে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে অবস্থান করেন।
বৈঠক শেষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ সময় আলোচনা করে তাঁদের দাবিদাওয়ার বিষয়গুলো শুনেছি। আমরা চেষ্টা করেছি তাঁদের সেসব দাবিদাওয়া পূরণ করার। দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ (শনিবার) সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ থাকা হল, হলের ডাইনিং, বিদ্যুৎ, পানিসহ সবকিছু চালু করা হবে। কাল রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম আগের মতো শুরু হবে এবং ক্লাস ও পরীক্ষা যথারীতি চলবে।’
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়টি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উপাচার্য এস এম ইমামুল হকের পদের মেয়াদ রয়েছে প্রায় দুই মাস। এই দুই মাসে তিনি যাতে কর্মস্থলে না আসেন, সে লক্ষ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে একটি লিখিত সুপারিশ পাঠাব। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মহিউদ্দীন সিফাত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বৈঠকে মন্ত্রী ও মেয়র আমাদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে যে আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে আমরা একমত। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আমরা আলোচনা করে আন্দোলন প্রত্যাহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। এই সিদ্ধান্ত আমরা পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেব।’
আজকের বৈঠক এবং এর সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য এস এম ইমামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আর কী বলব?’
গত সোমবার পদত্যাগের জন্য উপাচার্যকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে পদত্যাগ করেননি উপাচার্য এস এম ইমামুল হক। গত ২৬ মার্চ দুপুরে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বললে ২৭ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে উপাচার্য তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি দেন। সেই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।