রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকারের তৎপরতা বরাবরই নির্বিকার: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের তিন বছর হলেও তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি অনিশ্চিত বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘লিপ সার্ভিস’ (মুখের কথা) ছাড়া সরকারের আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কারণে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়নি বলে জানান।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হয়ে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।  গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অত্যাচার ও প্রাণহানিসহ সহায়-সম্বল হারিয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ শুরু হয়েছে। মানব ভোগান্তির এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর পড়ছে ভয়াবহ চাপ।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আগ্রহী রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের সঙ্গে নিয়ে জোরালো চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অগ্রগতি আনতে পারত সরকার। কিন্তু সরকারের তৎপরতা বরাবরই নির্বিকার। ইতিপূর্বে কয়েকবার কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খবর প্রচারিত হলেও এর কোনো বাস্তব প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়নি। ‘লিপ সার্ভিস’ ছাড়া এ ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। কোনো অগণতান্ত্রিক সরকারেরই বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সামর্থ্য থাকে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এক অন্ধকার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হতাশার মধ্যে রোহিঙ্গারা হাবুডুবু খাচ্ছে। বেশ কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। দেশ থেকে বিতাড়িত ও গৃহহীন রোহিঙ্গাদের ইয়াবা কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে। এই কারবারের সঙ্গে ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতার কথাও সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে।’

রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ দ্রুত নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশ জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। এ ছাড়া এ সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে আঞ্চলিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে বলে বিভিন্ন দেশ যে মত প্রকাশ করেছে, তার সঙ্গে তিনি একমত পোষণ করেন।