২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

রুহুল হককে সোনার নৌকা উপহার

আ ফ ম রুহুল হক, শহিদুল আলম
আ ফ ম রুহুল হক, শহিদুল আলম

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ফ ম রুহুল হককে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের স্থানীয় কর্মীরা তাঁর শেষ নির্বাচনী জনসভায় একটি সোনার নৌকা ও একটি সোনার কোট পিন উপহার দিয়েছেন। গত বুধবারের এই জনসভায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলেছেন, এই আসনের কোনো কেন্দ্রে ধানের শীষ প্রতীকের যেন দশটার বেশি ভোট না পড়ে। তারা লক্ষাধিক ভোটে রুহুল হককে বিজয়ী করার অঙ্গীকার করেছেন।

আশাশুনি-দেবহাটা-কালীগঞ্জ (আংশিক)—এই তিন উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ আসন। এখানে চিকিৎসক রুহুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী মো. শহিদুল আলম। তিনি একজন হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ।

রুহুল হক ও তাঁর কর্মীরা যখন সমগ্র নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন, তখন শহিদুল আলমের কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘এখানে নির্বাচন ৯৯ শতাংশ শেষ, বাকি আছে ১ শতাংশ।’

 বুধবার রুহুল হকের জনসভাটি ছিল নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেনসিয়াল কলেজ মাঠে। বিকেল চারটায় এই জনসভা শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। জনসভার জন্য বিশাল তোরণ নির্মাণ করা হয়। দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসে করে ভোটারদের জনসভায় আনা হয়। বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে জনসভায় কর্মী-সমর্থকদের আসতে দেখা যায়। এলাকায় নৌকা প্রতীকের কিছু রঙিন পোস্টারও চোখে পড়েছে।

জনসভায় রুহুল হক আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথা বলেছেন। কিন্তু উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতারা ধানের শীষের প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের নানাভাবে হুঁশিয়ার করেছেন। কেউ বলেছেন, কোনো কেন্দ্রে ধানের শীষ যেন দশটার বেশি ভোট না পায়। একটি ভোট বেশি পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রুহুল হক এত বড় জনসভা করলেও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শহিদুল আলম জনসভা তো দূরের কথা, মানুষের বাড়িতে গিয়েও ভোট চাইতে পারছেন না। পুরো নির্বাচনী এলাকায় তাঁর একটিমাত্র নির্বাচনী ক্যাম্প চোখে পড়েছে। ক্যাম্পটি তাঁর বাড়িতে।

গত মঙ্গলবার রাত নয়টায় এবং বুধবার সারা দিনে ওই নির্বাচনী ক্যাম্পে কোনো মানুষ দেখা যায়নি। অনেক চেয়ার একটির ওপর একটি সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

বুধবার ওই ক্যাম্পে গিয়ে কথা হয় একজনের সঙ্গে। সাংবাদিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দোতলায় যাওয়ার অনুমতি পাওয়া মেলে। সেখানে দরজা বন্ধ অবস্থায় চারজন কর্মীকে পাওয়া যায়। তাঁরা জানালেন, বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোটার তালিকা এবং পোলিং এজেন্টদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তাঁরা কেউই নিজেদের পরিচয় জানাতে রাজি হননি।

তাঁদের একজন অভিযোগ করলেন, ১০ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ১০০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। শুধু ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুলিশ এই নির্বাচনী ক্যাম্প থেকেই ৪৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। তিন জায়গায় তাঁদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে ফেলা হয়েছে।

এ ঘটনার পর থেকে শহিদুল আলম গুটিয়ে গেছেন বলে স্থানীয় জনসাধারণ জানিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় যেতে রাজি হচ্ছেন না।

গতকাল সকালে তারালি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের এক কর্মী জানিয়েছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন এবং বলছেন, নৌকায় যদি ভোট না দেন, তাহলে কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই।