যশোর বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে ভালো করেছে খুলনা জেলার কলেজগুলো। এ বছর খুলনার ৯৭টি কলেজ থেকে ১৮ হাজার ১০৫ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ১৪ হাজার ২৪২ জন। এর মধ্যে ৭ হাজার ৫৪৪ জন ছেলে ও ৬ হাজার ৬৯৮ জন মেয়ে। পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৬। গত বছর জেলায় পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৯০।
যশোর বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পাসের হারে বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে খুলনার পর মেহেরপুর দ্বিতীয় (৭২ দশমিক ৬৭), সাতক্ষীরা তৃতীয় (৭১ দশমিক ৯৬) ও ঝিনাইদহ চতুর্থ (৭০ দশমিক ৫৪) স্থানে আছে। বোর্ডে সর্বনিম্ন ৬০ দশমিক ১৬ পাসের হার মাগুরায়।
বোর্ডে এবার পাস করেছেন ৭০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৪৪৭ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪২ ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৫৮৬ জন। এ বছর বোর্ডে মেয়েদের পাসের হার ৭৩ দশমিক ৯৩, ছেলেদের ৬৬ দশমিক ৫৬।
২০১৬ সালে খুলনার যেসব কলেজ ভালো করেছিল সেগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত দিনে বোর্ডে শীর্ষে অবস্থান করা কলেজগুলো এবারও ভালো ফল করেছে। তবে পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার কমেছে।
খুলনা পাবলিক কলেজ, এম এম সিটি কলেজ, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ, পাইওনিয়ার সরকারি বালিকা মহাবিদ্যালয় ও এমসিএসকে সেরা তালিকায় রয়েছে।
এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে জেলার শীর্ষে অবস্থান করছে খুলনা সরকারি এম এম সিটি কলেজ। কলেজটি থেকে এ বছর ৩০০ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর এই কলেজ থেকে ৪৮৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এ কলেজ থেকে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছে ৯০৪ জন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮৭১ জন। পাসের হার ৯৬ দশমিক ৩৫।
এম এম সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ঈমান আলী বলেন, ‘জিপিএ-৫-এ বোর্ডে আমরাই সেরা।’
অন্যদিকে খুলনা জেলার ভেতরে চলতি বছর পাসের হারের দিক থেকে শীর্ষে অবস্থান করছে খুলনা পাবলিক কলেজ। এই কলেজ থেকে ৬৬৪ জন পরীক্ষা দিয়ে ৬৬০ জন পাস করেছেন। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৪। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১২৮ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১৬৪ জন।
খুলনা পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পাসের হারে খুলনার কলেজগুলোর মধ্যে আমরাই সেরা অবস্থানে। তবে জিপিএ-৫ আরও বেশি পাওয়া উচিত ছিল।’
রূপসা উপজেলার সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ গত বছর পাসের হার ৯৯ দশমিক ৮৫ পেয়ে জেলায় শীর্ষে ছিল। গত বছর এই কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৩৩৬ জন। তবে এ বছর মারাত্মক ফল বিপর্যয় হয়েছে কলেজটির। এ বছর ৭৪০ জনের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৬৫ হারে ৫৪৫ জন পাস করেছেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ১০ জন।
কলেজের অধ্যক্ষ সরদার ফেরদৌস আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে ভালো ফল করলেও এবার আমরা তা ধরে রাখতে পারিনি।’
সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজ থেকে ১ হাজার ৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৮৯৭ জন পাস করেছেন। পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩৮ জন।
খুলনার মিলিটারি কলেজিয়েট স্কুল (এমসিএসকে) থেকে এ বছর ৭৬ জন পরীক্ষার্থীর ৭৪ জন পাস এবং ১৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত বছর জিপিএ-৫ ছিলেন ৪১ জন।
পাইওনিয়ার সরকারি গার্লস কলেজের ৯৮৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৯৩৩ জন। পাসের হার ৯৪ দশমিক ৪৩। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১৩ জন। গত বছরের চেয়ে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে কলেজটির।
সরকারি মহিলা (বয়রা) কলেজ থেকে ৪৪৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন ৪১৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮৮ জন। পাসের হার ৯৩ দশমিক ৬৮। গত বছরের চেয়ে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে কলেজটির।
সরকারি বিএল কলেজ থেকে এ বছর ৫৪১ জন পরীক্ষা দিয়ে ৪১৪ জন পাস করেছেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২২ জন।
আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ থেকে ৪৩৮ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৬০ জন পাস করেছেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ জন। পাসের হার ৮২ দশমিক ১৯। গত বছরের চেয়ে পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে কলেজটির।