মুরগি, মসলা ও চিনির দাম বেড়েছে
রমজান মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দর নেমে এসেছিল ১৩০ টাকা কেজিতে। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ আগে দাম আবার বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি, পাশাপাশি দেশি মুরগি ও সোনালিকার (কক) দামও বেড়েছে।
রাজধানীর রায়েরবাজার, হাতিরপুল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সোনালিকা মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা কেজি দরে এখন বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বাড়ছে। একইভাবে দাম বেড়েছে মুরগি ও মাংস রান্নার প্রয়োজনীয় উপাদান মসলারও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এলাচি, জিরা, দারুচিনি ও লবঙ্গের দাম বেড়েছে মানভেদে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে খোলা চিনির দামও কেজিতে দুই টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। বিভিন্ন ধরনের সেমাইয়ের দামও গত বছরের চেয়ে এবার কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারের মায়ের দোয়া পোলট্রি হাউসে গতকাল ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৬০ টাকা, সোনালিকা মুরগি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতা দীন মোহাম্মদ বলেন, দুদিন ধরে মুরগির দাম বাড়তি। ঈদের কারণে দাম বেড়েছে।
এবারের রমজানে সিটি করপোরেশন গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়নি। ফলে রোজার শুরু থেকেই বিভিন্ন বাজারে ইচ্ছেমতো দামে গরু মাংস বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ীরা। জিগাতলা বাজারের মাংস বিক্রেতা সেন্টু হাওলাদারের দোকানে রোজার শুরুতে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল দাম ছিল ৬০০ টাকা। ঈদের আগে দাম আরও বাড়বে বলেও জানান এই মাংস বিক্রেতা।
মসলার চড়া দাম
রায়েরবাজার ও কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি এলাচি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, জিরা ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা, দারুচিনি ৪০০-৪৫০ টাকা, লবঙ্গ ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আলুবোখারা ৪৪০ থেকে ৬০০ টাকা, জয়ত্রী ২ হাজার ৪২০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং জায়ফল বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।
রায়েরবাজারের মসলা বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, রোজার আগেও প্রতি কেজি আলুবোখারার দাম ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা ছিল, এখন ৪৪০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন বলেন, জয়ত্রী মসলা ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এই মসলার প্রতি কেজি দর আড়াই হাজার টাকা ছিল।
বাজারের প্রতি কেজি খোলা লাচ্ছা সেমাই ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর লম্বা সেমাইয়ের (বাংলা সেমাই) দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
রায়েরবাজারে গতকাল সেমাই কিনতে আসেন গৃহকর্মী ফেরদৌসী খাতুন। তিনি বলেন, সারা বছর খাওয়া হয় না। শুধু ঈদ এলেই সেমাই কেনেন। কিন্তু গতবারের চেয়ে এবার সেমাইয়ের দাম বেশি। সব পণ্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকায় তাঁদের মতো মানুষ খুব চাপে আছেন।