মহেশখালীর যত ঝুঁকি
চট্টগ্রামে মগ শাসন বইয়ে ইতিহাসবিদ সুনীতি ভূষণ কানুনগো লিখেছেন, ১৫৫৯ খ্রিষ্টাব্দে একটি বড় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কক্সবাজারের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মহেশখালী। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়েও এই দ্বীপের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-মহেশখালীর মাটির গভীরে একটি বড় ধরনের চ্যুতিরেখা বা ফাটল রয়েছে। সেখানে প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০টি অতি মৃদু ভূমিকম্প হয়। গত ৬ মে রাত সাড়ে আটটায় টেকনাফ-মহেশখালী এলাকায় রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ ও যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৩-১৬ সালব্যাপী এক গবেষণা বলছে, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চ্যুতিরেখায় ১ হাজার বছর ধরে শক্তি সঞ্চয় হচ্ছে। যেকোনো সময় এখানে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এর আওতায় মহেশখালীও পড়েছে। মুখ্য গবেষকদের একজন অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, দ্বীপটিতে যেকোনো বড় বিনিয়োগের আগে এই ঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিতে হতো।
অন্যদিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত মনে করেন, এখানকার প্রতিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদা পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) হতে হবে। এ ছাড়া মহেশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া থেকে শুরু করে মিরসরাই-বাঁশখালী পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক শিল্পকারখানা হচ্ছে। তাই একটি আঞ্চলিক ইআইএ করাও অতি জরুরি।