প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে খেলতে পাঠানোর আগে আয়োজক দেশের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই দল পাঠানো হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে যেখানেই আমাদের ক্রিকেট টিম পাঠাব, সেখানে অন্তত তাদের নিরাপত্তার বিষয়টা আমরা ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই পাঠাব। কারণ আমাদের দেশে যারা খেলতে আসে তাদের আমরা সব সময় যথাযথভাবে নিরাপত্তা দিয়ে থাকি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় ৪ লেন ফ্লাইওভার এবং লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনার পাশাপাশি এ ঘটনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই সঙ্গে এ ঘটনাকে ‘ঘৃণ্য সন্ত্রাসী’ ও ‘জঙ্গিবাদী ঘটনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে বিশ্ববাসীকে একযোগে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ওই মসজিদেই নামাজ পড়তে যাওয়ার কথা। আর তারা গিয়েছিলও কিন্তু ওখানে একজন আহত মহিলা তাদের মসজিদের মধ্যে ঢুকতে দেয়নি। তারা কোনোমতে জীবন নিয়ে ফিরে আসে। এ জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে আমি শুকরিয়া আদায় করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশা করি বিশ্ববাসী এই ধরনের ঘটনার শুধু নিন্দাই করবে না, এই ধরনের সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ঘটনা যেন বন্ধ হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’
নিউজিল্যান্ডের মসজিদে প্রার্থনারত মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনাকে ঘৃণ্য সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঘৃণ্য ঘটনা, এটা সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ঘটনা। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেখানে যেভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ঢুকে নামাজরত অবস্থায় তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর চেয়ে জঘন্য কাজ, ঘৃণ্য কাজ হতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জঙ্গি, যারা সন্ত্রাসী, তাদের কোনো ধর্ম নাই, তাদের কোনো দেশ নাই, জাতিও নাই। তারা সন্ত্রাসী। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশকে জঙ্গিমুক্ত করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে আমরা আমাদের দেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মানুষের অমঙ্গল ছাড়া কোনো মঙ্গল করতে পারে না।’
বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা, এটা সকল মানুষের স্বাধীনতা। আমাদের দেশে আমরা সেটা রক্ষা করতে পেরেছি। যে যার যার ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালন করবে। সেই সুযোগটা আমরা করে দিয়েছি।’
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে মসজিদের ভেতরে ঢুকে ৪৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে, অনেকে আহত হয়েছে। সেখানে আমাদের ৩ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছে। তাদের প্রতি শোক জানাচ্ছি।’
গতকাল শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জুমার নামাজের সময় আল নুর ও লিনউড মসজিদে বন্ধুকধারীদের হামলায় ৪৯ জন নিহত এবং কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল সে সময় তৃতীয় টেস্টে অংশগ্রহণের জন্য ক্রাইস্টচার্চে অবস্থান করছিল।