ব্র্যাকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কর্মশালা
তরুণ জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে নিজস্ব ভাবনা ও মানসিক চাপ কাটাতে পরিবার-পরিজনের করণীয় বিষয় নিয়ে সম্প্রতি ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ কর্মশালা। গতকাল শুক্রবার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত ‘পাবলিক স্পিকিং কমপিটিশন ও সেলফ কেয়ার ওয়ার্কশপ’ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা তাঁদের এই মতামত তুলে ধরেন।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে ‘ওদের যত্নে তুমিও শামিল’ স্লোগান নিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (ব্র্যাক আইইডি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর কারিগরি সহায়তায় ছিল বাংলাদেশ ডিবেটিং কাউন্সিল।
আয়োজকেরা জানান, সুস্থভাবে জীবনযাপনের জন্য প্রত্যেক মানুষেরই প্রয়োজন যত্ন, পরিচর্যা আর আস্থা। এ বিষয়ে তরুণদের মনের কথাগুলো, তাঁদের অনুভূতিগুলো জানার ও জানানোর প্রচেষ্টাই ছিল এই অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্য। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর মধ্যে সেরা বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশাদ রিয়াজ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কর্মসূচির পরিচালক নবনীতা চৌধুরী এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ।
আলোচনায় উঠে আসে তরুণদের নানা ভাবনা। তাঁরা মনে করেন, মানসিক চাপের মূল কারণগুলো হচ্ছে: তাঁদের মতামতকে বয়োজ্যেষ্ঠদের গুরুত্ব না দেওয়া, নিজেদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কথা কাউকে মন খুলে বলতে না পারা, তাঁদের আবেগময় কাজগুলোর অযথা সমালোচনা করা, মানসিক আবেগ-অনুভূতির মূল্যায়ন না করা প্রভৃতি।
ব্র্যাকের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের নির্লিপ্ত থাকলে চলবে না। অন্যের হতাশা-উদ্বেগে আমাদেরও কিছু আসে-যায়, এ বোধটা সবার আগে তৈরি করতে হবে। আমাদের কান এতটা সজাগ রাখতে হবে, যাতে কেউ মন খুলে তার কথা বলার সুযোগ পায়।’
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মানসিক সমস্যাগুলোর ৫০ ভাগ ১৪ বছরের আগেই শুরু হয়ে যায়, আর ৭৫ ভাগ দেখা দেয় ২৫ বছরের আগেই। তাই অন্যদের চেয়ে তরুণদের বেশি নিতে হবে। বর্তমান বাস্তবতাও তাই বলে।’
ব্র্যাক আইইডি ২০০৪ সাল থেকে নিজস্ব গবেষণা, কর্মসূচি ও প্রকল্প পরিচালনার অভিজ্ঞতার আলোকে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগের সমাধান ও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব প্রদান করে আসছে। পাশাপাশি এটি একটি সম্ভাবনাময়, সহানুভূতিশীল প্রজন্ম গড়ে তুলতে তারুণ্যের সার্বিক সুস্থতা নিয়ে কাজ করছে।