বিএনপির প্রার্থীরা ঘরে, আওয়ামী লীগ প্রচারে
চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে বিএনপির প্রার্থীরা গতকাল বৃহস্পতিবারও নানা বাধার মুখে ‘ঘরে আটকে’ ছিলেন। অন্যদিকে ‘খোলা মাঠে’ ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। অন্য প্রার্থীরাও গণসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন দিনভর।
চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসন
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। গতকাল তিনি গোলবাহার, মনপুরা এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে তিনি কচুয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে নির্বাচনী সভা করেন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন শুরু থেকেই মাঠে নামতে পারেননি। গতকালও তিনি প্রচার চালাননি।
মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমাকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামতে দিচ্ছে না। পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আমার ওপর হামলা চালানো হয়। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েও কাজ হয়নি।’
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) আসন
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নুরুল আমিন। তিনি গতকাল সকালে মোহনপুর, ছেঙ্গারচরে গণসংযোগ করেন। বিকেলে তিনি দলীয় নেতা-কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে সভা করেছেন। এখানে বিএনপির প্রার্থী মো. জালাল উদ্দিন ভোটের মাঠে ঢুকে ফতেহপুর ইউনিয়নের লধুয়া গ্রামের বাড়িতে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থায় আছেন। তিনি বলেন, ১২ ডিসেম্বর থেকে তিনি বাড়িতে পুলিশি ‘গৃহবন্দী’ অবস্থায় রয়েছেন। বিষয়টি একাধিকবার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।
চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসন
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দীপু মনি। গতকাল সকালে তিনি নির্বাচনী কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সভা করেন। বিকেলে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে নির্বাচনী জনসভা করেন। এখানে বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ কয়েক দিন নির্বাচনী প্রচারণা চালান। কিন্তু গত মঙ্গলবার থেকে পুলিশ দিয়ে তাঁকে ‘গৃহবন্দী’ করে রাখা হয়েছে। তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘আমি চাঁদপুর শহরের নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ হয়ে আছি। এ ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার ভূমিকায় হতবাক হয়েছি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান কথা দিয়েছিলেন পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসন
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান। গতকাল সকালে তিনি পাইকপাড়ায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মাঠে সভা করেন। এ প্রচারণায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্ত, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফরসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ঋণ খেলাপের কারণে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুল হান্নানের প্রার্থিতা উচ্চ আদালত স্থগিত করেছেন। গত বুধবার রাতে এখানে ধানের শীষের প্রার্থিতা পেয়েছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ হারুনুর রশিদ। তবে তিনি গতকাল পর্যন্ত ভোটের মাঠে উপস্থিত হননি।
হারুনুর রশিদ বলেন, গতকাল বিকেলে ফরিদগঞ্জে তাঁর গ্রামের বাড়িতে ৭০ থেকে ৮০ জনের একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে করে এসে ভাঙচুর চালিয়েছে।
চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসন
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। তিনি গতকাল সকালে শাহরাস্তির বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মমিনুল হক কিছুদিন প্রচারণা চালালেও কদিন ধরে ঘরে ‘বন্দী’।
জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মো. জিহাদুল কবির বলেন, ‘কে প্রচারণা চালাতে পারছেন, কে পারছেন না—তা আমাদের দেখার দায়িত্ব নয়। এরপরও কোনো অভিযোগ পেলে আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’