বাসে ধর্ষণচেষ্টার প্রধান অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছেন সেই নারী

চলন্ত বাসে ধর্ষণচেষ্টার প্রধান অভিযুক্ত মো. শহীদ মিয়া
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের দিরাইতে ধর্ষণ এড়াতে চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়েছিলেন এক নারী। চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফিরেছেন। প্রধান অভিযুক্তকে শনাক্তও করেছেন।

আজ রোববার মালিবাগ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এ খবর জানায়।  

প্রধান অভিযুক্ত বাসচালক মো. শহীদ মিয়া। তিনি সিলেট থেকে সুনামগঞ্জগামী বাস ফাহাদ অ্যান্ড মায়শা পরিবহনের চালক। গত ২৬ ডিসেম্বর ওই বাসেই এক নারী ধর্ষণচেষ্টার শিকার হন।‌

ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কটি ইউনিট আসামি গ্রেপ্তারে তৎপর হয়। ঢাকায় সিআইডির বিশেষ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর সিআইডির পক্ষ থেকে এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন। গতকাল এই মামলার প্রধান আসামি শহীদ মিয়াকে সুনামগঞ্জের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় সিআইডির একটি দল।

গ্রেপ্তারের আগে শহীদ ঢাকায় এসেছিলেন। এর আগে সিআইডি শহীদের ছোট ভাই মো. কছির ও দুলাভাই সুমনকে আটক করে। শহীদকে গ্রেপ্তারে ভোগড়া বাইপাস এবং উত্তরা দিয়াবাড়িতেও অভিযান চালায় সিআইডি। সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের ধারণা বাসচালক ও তাঁর সহকারীরা গণধর্ষণের পরিকল্পনা করেছিলেন।

ঘটনার শিকার নারীর সিলেট থেকে দিরাই যাওয়ার কথা ছিল। সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের ১০ কিলোমিটার আগে একটি বাইপাসে ভুক্তভোগী নারীর নেমে যাওয়ার কথা ছিল। সেখান থেকে অন্য কোনো পরিবহনে করে তাঁর দিরাইতে পৌঁছানোর কথা।

বাসচালক বাসটি সরাসরি সুনামগঞ্জে নিয়ে যান। তারপর দিরাইয়ের দিকে রওনা দেন। সব যাত্রী সুনামগঞ্জে নেমে যাওয়ায় বাসে তখন ওই নারী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। এ সময় বাসচালক স্টিয়ারিং বক্করের হাতে ছেড়ে দেন ও ভুক্তভোগী নারীকে চুলের মুঠি ধরে বাসের পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। নারী জোরে চিৎকার করেন ও শহীদকে ধাক্কা দিয়ে বাসের সামনে চলে আসেন। সম্ভ্রম বাঁচাতে বাস থেকে লাফ দেন তিনি।

দিরাইয়ের আগে সুজানগ্য নামের জায়গায় এ ঘটনা ঘটে। তখনো বক্কর বাস চালাচ্ছিলেন। এলাকাবাসীর ধাওয়ায় একপর্যায়ে বাস ফেলে চলে যান আসামিরা। আহত নারীকে প্রথমে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বাসের কন্ডাক্টর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে আগেই। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সিআইডি বলছে, তাঁদের গণধর্ষণের পরিকল্পনা থাকতে পারে। না হলে সুনামগঞ্জ থেকে বাস ঘুরিয়ে দিরাইয়ের পথে আসত না বাসটি। বক্করও বাসচালককে সুযোগ করে দিতেন না।

সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক হাসিব আজিজ বলেন, অতীতেও তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।