পিঠে আঘাত করতে দেবেন না মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার এলাকায় তাঁর নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘সশস্ত্র’ হামলা করেছেন। তিনি বলেছেন, হামলা-মামলা হলেও তাঁরা নির্বাচন থেকে পালিয়ে যাবে না। আঘাত এলে বীরের মতো বুক পেতে নেবেন, পিঠে আঘাত করতে দেবেন না।
আজ শনিবার বিকেলে শাহজাহানপুরে নিজ বাসভবনে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন। তাঁর অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনায় তাঁর কম–বেশি ৬০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহত নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী। সেই প্রচারণা মিছিল থেকেও সাতজনকে আটক করার অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস।
হামলার বিষয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি নেতা-কর্মীদের বাইরে রেখে বাজারে ঢুকি। একপর্যায়ে হঠাৎ দেখি একদল ছেলে হিংস্র মারমুখী মনোভাব নিয়ে আমার নেতা-কর্মীদের বেধড়ক পেটাচ্ছে। আমি এগিয়ে গেলে আমাকেও আঘাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাদের থামানোর চেষ্টা করে আহত হয়েছেন। এক কর্মীর হাত ভেঙে গেছে। তাঁরা না থাকলে হয়তো আপনাদের সামনে কথা বলতে আসতে পারতাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে তো কোনো অস্ত্র ছিল না। লিফলেটই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। এর মধ্যে আমরা আঘাতের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। জানে তো বেঁচে গেছি। তবে এমন আঘাত এলে বীরের মতো বুক পেতে নেব, পিঠে আঘাত করতে দেব না। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের ওপর হামলা-মামলা হচ্ছে, এসব মোকাবিলা করেই আমরা নির্বাচনে আছি। আমরা পলায়নপর হব না।’
নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘চেষ্টা করব আমার সব ভোটারের কাছে পৌঁছানোর জন্য। কিন্তু না পারলে তা হবে নেহাত অপারগতা। আমার বাসায় লিফলেট পড়ে আছে, ওদের (আওয়ামী লীগের) লিফলেটে তো ঢাকা শহর ছেয়ে গেছে। সরকারের যে বিরূপ আচরণ, তাতে তো নির্বাচনের ফলাফল অনুমেয়। তবুও আমি ভবিষ্যৎ বলতে চাই না।’
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শাহবাগ ও রমনা থানায় অভিযোগ করেছি। রমনা থানা অভিযোগ গ্রহণই করল না।’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বলেন, বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পথ খুঁজছে। কিন্তু আমি বলতে চাই, সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। আমরা ভোট দিতে যাব এবং আশা করব ভোটের প্রতিফলন বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে আসবে।’
আব্বাসের কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ
আজ দুপুরে ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসের জনসংযোগে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় ছয় থেকে সাতজন আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই আসনে নৌকার প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আজ বেলা একটার দিকে সেগুনবাগিচা এলাকায় গণসংযোগ করার সময় মির্জা আব্বাসের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের সামনে ওয়ার্ড কমিশনারের কার্যালয়ের পাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথমে নৌকার পক্ষে স্লোগান দিয়ে আব্বাসের কর্মীদের ধাওয়া দেওয়া হয়, পরে তাঁর কর্মীদের ওপর হামলা হয়। ঘটনার সময় মির্জা আব্বাস কমিশনারের কার্যালয়ের ভেতরে ছিলেন।