পাহাড়ে হাম উপদ্রুত এলাকায় মানবিক সহায়তার আহ্বান
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও বান্দরবানের লামায় হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ‘বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম’ ও ‘কাপেং ফাউন্ডেশন’। সংগঠন দুটি আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে। দুই সংগঠনের পক্ষে বিবৃতি পাঠান হিরন মিত্র চাকমা।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের তৎপরতা ও যেভাবে সবার মনোযোগ পেয়েছে, নিঃসন্দেহে তা ভালো ফলাফল এনে দেবে। কিন্তু করোনার ডামাডোলে পার্বত্য অঞ্চলে হামের প্রাদুর্ভাব কর্তৃপক্ষের চোখের আড়ালে থাকবে কি না, তা–ও বিবেচনায় নিতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ প্রাকৃতিক মহামারি প্রায় মাসখানেক আগেই দেখা দেয় এবং কমপক্ষে ৩০০টি শিশু আক্রান্ত হয় ও আটজনের প্রাণহানি ঘটে। এ অবস্থায় সেখানকার অধিবাসীরা যথেষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন যাপন করছে এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটি নিঃসন্দেহে সে অঞ্চলের নাগরিক সুবিধা ও স্বাস্থ্যসেবার করুণ অবস্থাকে প্রতিফলিত করে। বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায়ও হামে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাজেকে উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হামের টিকা ও ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে। কিন্তু কোনো কোনো রোগী এমন মুমূর্ষু যে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসতে হয়েছে। অন্যদিকে লামার উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসক দল গিয়েছে কি না, সে তথ্য আমরা পাইনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, সরকারের ঘরে ঘরে টিকাদান কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যসেবা জনগণের মাঝে পৌঁছালে এ রকম প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি হতো না। দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে এতগুলো প্রাণ ঝরে যেত না। একবিংশ শতাব্দীতে হামে মৃত্যুবরণ কল্পনাই করা যায় না। আক্রান্ত রোগীদের বাঁচাতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আরও বেশি এগিয়ে আসা জরুরি। তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেও হাত বাড়ানো দরকার। করোনার সংকটে এ মানবিক সংকটটি যেন হারিয়ে না যায়।’
বিবৃতিতে চার দফা সুপারিশ করা হয়। সেগুলোর মধ্যে আছে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে উপদ্রুত এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক, নিরবচ্ছিন্ন ও পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, পাহাড়ে হাম উপদ্রুত এলাকায় জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা, আক্রান্ত রোগীদের বিনা মূল্যে সুচিকিৎসাব্যবস্থা করা এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।